ঝিনাইদহের শৈলকুপায় পরকীয়ার জেরে স্বামী-স্ত্রীর বিষপানের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় স্বামী আলামিন শেখ (২৮) মারা গেলেও বেঁচে আছেন স্ত্রী সাথী খাতুন (২২)।
শনিবার (১৪ জুন) রাতে উপজেলার রঘুনন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে রবিবার সকালে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বামীর মৃত্যু হয়। শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন গৃহবধূ সাথী খাতুন।
আলামিন শেখ ওই গ্রামের মৃত কাশেম শেখের ছেলে। সাথী খাতুন একই উপজেলার কামান্না গ্রামের মনিরুল ইসলামের মেয়ে। ওই দম্পতির দুই বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
এলাকাবাসী ও স্বজনদের দাবি, ছয় বছর আগে আলামিন শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় শৈলকুপা উপজেলার কামান্না গ্রামের মনিরুল ইসলামের মেয়ে সাথী খাতুনের। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই তাদের মধ্যে নানা কারণে ঝামেলা লেগেই ছিল। প্রায় এক মাস ধরে এলাকার একটি কিশোর ছেলের সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগ উঠে সাথী খাতুনের। শনিবার দুপুরে এই নিয়ে পারিবারিকভাবে সালিশ বৈঠকে সাথী খাতুনের পরিবারের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয় আলামিন শেখের পরিবারের। এরই জেরে বিকেলে বিষপান করেন সাথী খাতুন। পরে তাকে উদ্ধার করে শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা। স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে রাত ১০টার দিকে বাড়িতে গিয়ে বিষপান করেন আলামিন শেখ। পরিবারের সদস্যরা প্রথমে তাকে শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিার সকালে তার মৃত্যু হয়।
আলামিন শেখের মামী উম্মে সালমা জানান, পরকীয়ার বিষয়টি জানতে পেরে শনিবার দুপুরে পারিবারিকভাবে বসা হয়। সেখানে আলামিনের শ্বশুরসহ তার বাড়ির লোকজন ছিল। সবকিছু মেনে নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করার সিদ্ধান্ত জানায় আলামিন। পরে বিকেলে সবার অগোচরে ঘরের মধ্যে গিয়ে বিষপান করে সাথী। জানতে পেরে আলামিন ও পরিবারের সদস্যরা তাকে শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে আলামিনকে তার শশুরবাড়ির লোকজন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মামলার ভয় দেখায়। আলামিন অপমান সহ্য করতে না পেরে বাড়িতে এসে বিষপান করে।
আলামিনের মা ফাহিমা খাতুন বলেন, কয়েকদিন আগে একই এলাকার শাহিদুলের ছেলে আলীর সঙ্গে ঘরের মধ্যে আপত্তিকর অবস্থায় ছেলের বউকে দেখেন তিনি। এরপর থেকেই ছেলের সঙ্গে পুত্রবধূ সাথী খাতুনের ঝামেলা চলছিল।
গৃহবধূ সাথী খাতুন বলেন, আমার শ্বাশুড়ি মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে খারাপ বানিয়েছে। আমার সাথে কোনো ছেলের সম্পর্ক নেই। আমি লজ্জায় বিষ খেয়েছি।
এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খাঁন জানান, খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। মরদেহটি বর্তমানে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/কেএ