বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা পাল্টা শুল্কহার অবশেষে ২০ শতাংশ নির্ধারণ স্বস্তিদায়ক হয়েছে। মার্কিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের দীর্ঘ আলোচনা ও দরকষাকষির মাধ্যমে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা কাটল। শুল্কহার প্রতিযোগীদের কাছাকাছি আসায় দেশের ব্যবসায়ীরা যে অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়বেন না, এটাও নিশ্চিত হলো। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এটাকে এক ঐতিহাসিক কূটনৈতিক বিজয় আখ্যায়িত করে, এ জটিল প্রক্রিয়ার জট খুলতে, মার্কিন পক্ষের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা ও দরকষাকষিতে অংশ নেওয়া আলোচকদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন। বলেছেন, আগে আরোপিত ৩৭ থেকে ১৭ কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণে সক্ষম হওয়ায় আলোচকদের অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা এবং দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষা ও সেটা আরও এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের অবিচল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শিত হয়েছে। ট্রাম্পের ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ বলে সমালোচিত, পাল্টা শুল্কের হার ২০-এ নামিয়ে আনতে সংগত কারণেই আমাদেরও যুক্তরাষ্ট্রকে বেশ কিছু সুবিধা দিতে হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে দেশটি থেকে আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে নামমাত্র শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বর্তমান পরিস্থিাতি আপাত স্বস্তিকর, ইতিবাচক ও আশাব্যঞ্জক নিঃসন্দেহে। তবু এতে বিরাট আত্মতুষ্টির অবকাশ নেই। বরং এটাকে একটা সুযোগ ও সতর্কবার্তা হিসেবেই মূল্যায়ন করা উচিত। বাংলাদেশের এখনই এমন একটা কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, যাতে বৈচিত্র্যময়, প্রতিযোগিতামূলক ও সহনশীল বাণিজ্যকৌশল প্রতিষ্ঠা করা যায়। যা আমাদের বিশ্ববাণিজ্য ক্ষেত্রে স্থাায়ীভাবে সুরক্ষা দিতে সক্ষম হবে। একই সঙ্গে শুল্কহার আরও কমানোর প্রচেষ্টাও অব্যাহত রাখা জরুরি। ১৫ শতাংশ শুল্কহার পেয়েছে এমন দেশের সংখ্যা কম নয়; ১০ শতাংশও আছে। চৌকশ কূটনৈতিক কৌশল, সুদক্ষ কূটনীতিকদের পেশাদারি দৃঢ়তা, বাণিজ্যিক ভারসাম্য সৃজনের চলমান প্রক্রিয়া এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় তা আমাদের পক্ষেও পাওয়া অসম্ভব নয় বলে মনে করি।