সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

আজ প্রকাশ পাবে আমার ‘অল্প কথার গল্প গান’

আজ প্রকাশ পাবে আমার ‘অল্প কথার গল্প গান’

আজ ৭৮ বছরে পা রাখছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত উপমহাদেশের বরেণ্য গীতিকার, কাহিনিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার। আর একই দিনে প্রকাশ পাচ্ছে তাঁর বই ‘অল্প কথার গল্প গান’। বই ও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- আলী আফতাব

দেখতে দেখতে অনেকগুলো বছর পার করেছেন। কেমন লাগছে জীবনের পর্যায়ে এসে?

সত্যি বলতে কি, দেখতে দেখতে জীবনের এতগুলো বছর পার করেই ফেলেছি, সেটা এখনো আমার উপলব্ধিতে এলো না। কারণ ৭৭ কিংবা ৭৮ একটি সংখ্যা মাত্র। এ সংখ্যায় প্রত্যেক মানুষকেই পড়তে হয়। আমার সমান বয়সী অনেকেই এখন আর আমাদের মাঝে নেই। এই যে একে একে সবাই চলে যাচ্ছেন। আমাকেও এক দিন চলে যেতে হবে, এটাই সত্যি। তাই যত দিন বেঁচে আছি মনে আনন্দ নিয়ে, ভালোলাগা নিয়েই যেন বেঁচে থাকতে পারি, এ দোয়াই চাই। সবাই দোয়া করবেন যেন আমি সুস্থ থাকি, ভালো থাকি।

 

অনেকেই বলেন, সংখ্যার দিক দিয়ে আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক গানের রচয়িতা...

এ হিসাবটাও কিন্তু আমি করতে চাই না। কারণ আমাকে এত এত হাজার গান লিখতে হবে, সেটা নিয়ে কিন্তু কখনই আমি ভাবিনি। কাজ করতে করতে কখন যে শত শত হাজার হাজার গান লিখেছি তার হিসাব রাখা হয়নি। এখন আমার সন্তানরা বলে যে, বাবা তুমি এত এত গান লিখেছ। তখন একটা হিসাব আসে। একজন গীতিকার কখনই হিসাব করে গান লেখেন না। গান সৃষ্টি হয় মনের ভিতরের তাগিদ থেকে।

 

আপনার আজকের দিন নিয়ে কি বিশেষ কোনো আয়োজন আছে?

আছে তো অবশ্যই। কারণ আমার ৭৫তম জন্মদিনে আমার ছেলে উপল এবং মেয়ে দিঠি বিশেষভাবে দিনটি উদযাপন করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমার মা মারা যাওয়ার কারণে তা আর সে বছর করা হয়ে ওঠেনি। কয়েক বছর পর তাদের দুজনেরই উদ্যোগে এবার এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

 

তার কি কোনো বিশেষ কারণ আছে?

যেহেতু উদযাপন করাই হচ্ছে, একটি কারণ তো আছেই। আমার লেখা একটি বই আজ আমার জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশ পেতে যাচ্ছে। বইটির নাম ‘অল্প কথার গল্প গান’। এ বইটি প্রকাশের ক্ষেত্রে আমার ছেলে উপল, মেয়ে দিঠি, সাংবাদিক অভি মঈনুদ্দীন, নতুন সংগীতশিল্পী মোমিন বিশ্বাসকে আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিতে চাই। অবশ্যই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা বইটির প্রকাশক খন্দকার মনিরুল ইসলামের কাছে। কারণ বইটি তার প্রকাশনা ‘ভাষাচিত্র’ থেকে প্রকাশিত হচ্ছে।

 

কী কী থাকছে বইয়ে?

এ বইটি আসলে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশের প্রথম খন্ড। প্রতিটি খন্ডে প্রকাশিত হবে আমার লেখা বিভিন্ন গানের কথা। আমার লেখা কালজয়ী কিছু গানের লেখার প্রেক্ষাপট, গান লেখার গল্প। ৫০টি গান লেখার গল্প ছাড়াও বইটিতে থাকবে ২০০টি গানের কথা।

 

ছাড়া কি আর কিছু থাকছে?

বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের চলচ্চিত্র জগতের কালজয়ী শিল্পী, সুরকার, সংগীত পরিচালক, প্রযোজক, পরিচালকসহ বিভিন্ন শিল্পী কলাকুশলীর কীর্তিময় সময়ের বিভিন্ন ঘটনাও এতে উঠে আসবে।

 

দীর্ঘদিনের পথচলায় আপনার কোনো অপ্রাপ্তি আছে কি?

প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে কিন্তু জীবনের বিচার করি না। আমি আমার কর্মটা করে গেছি। মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। দেশ আমাকে সম্মান দিয়েছে, এখনো দিচ্ছে। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে। তবে এটা সত্য আমার আজকের অবস্থানের নেপথ্যে আমার স্ত্রী জোহরা গাজীর অবদান অপরিসীম। তার প্রতি আমি ঋণী।

 

নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে কিছু বলবেন কি?

আমি কিন্তু এখনো নতুন প্রজন্মের জন্যও গান লিখছি। নতুন প্রজন্মের ন্যান্সি, লুইপা, কণা, ইমরানসহ অনেকের জন্যও আমি গান লিখেছি, লিখছি। আমার লেখা গানগুলো এখনো শ্রোতারা ভীষণ আগ্রহ নিয়ে শুনছেন। এটাই অনেক অনেক ভালোলাগার। সবার জন্য শুভ কামনা, আমার জন্মদিনেই শুধু নয়, সব সময়ই আমার জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন আমাকে ভালো রাখেন, সুস্থ রাখেন।

সর্বশেষ খবর