সোমবার, ২৪ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

বিচ্ছেদের জন্য নিজেকেই আনলাকি মনে করছি : মাহিয়া মাহী

আলাউদ্দীন মাজিদ

বিচ্ছেদের জন্য নিজেকেই আনলাকি মনে করছি : মাহিয়া মাহী

‘অপুর মতো ভালো মনের ও হেল্পফুল মানুষ আর হয় না। ওকে ভালোবেসেই আমি বিয়ে করেছিলাম। দুজন দুজনকে আমরা এখনো অনেক ভালোবাসি। ওকে আমার জীবন থেকে হারিয়ে ফেলার জন্য নিজেকেই বড্ড আনলাকি মনে করছি।’ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে আবেগাপ্লুত ও কান্না বিজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বললেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী মাহিয়া মাহী। শনিবার (২২ মে) দিবাগত রাতে নিজেদের দাম্পত্য জীবনের ইতির বিষয়টি স্পষ্ট করে সামাজিক  যোগাযোগমাধ্যম  ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন মাহী। সেখানে তিনি শ্বশুরবাড়ির  লোকজনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন সম্পর্ক ধরে না রাখতে পারার জন্য। সিলেটের ব্যবসায়ী পারভেজ মাহমুদ অপুকে বিয়ে করেছিলেন অপু। বিয়ের পাঁচ বছর পূর্তি হতে আর মাত্র দুই দিন বাকি। এরই মধ্যে ডিভোর্সের ইঙ্গিত দিলেন মাহিয়া মাহী। ২০১৬ সালের ২৫ মে ব্যবসায়ী পারভেজ মাহমুদ অপুকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন মাহী।

এর আগে একাধিকবার গণমাধ্যমে মাহী-অপুর দাম্পত্য জীবনের ইতি হতে যাচ্ছে এমন গুঞ্জন শোনা  গেলেও তখন সেসব গুঞ্জন উড়িয়ে দেন মাহী। এবার নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসেই ডিভোর্সের ইঙ্গিত দিলেন মাহিয়া মাহী।

মাহীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম দুজনের মধ্যে মধুর সম্পর্ক থাকার পরও এমন কী ঘটনা ঘটেছে যে, শেষ পর্যন্ত বিচ্ছেদের পথে হাঁটতে হচ্ছে আপনাদের। জবাবে মাহী বলেন, দেখুন অনেক কিছু না চাইলেও শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে এমন অনাকাক্সিক্ষত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। মাহীর কাছে আবার প্রশ্ন, এটি কি আপনার একার সিদ্ধান্ত? উত্তরে তিনি জানান, ‘না আমার একার সিদ্ধান্ত নয়, দুজনই সমঝোতার মাধ্যমে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা চাই দুজনই ভালো থাকি।’ এমন জবাবে জনতে চাইলাম, ‘আপনার কথায় এই বিচ্ছেদের আড়ালে একটি রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি, আসলে ঘটনাটি কী? এমন জবাবে মাহী বলেন, দেখুন আমার মনটা এখন ভীষণ খারাপ, আমিও এমন অবস্থার জন্য কখনো প্রস্তুত ছিলাম না। শুধু আমি নই, অপুও চায়নি। এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু এখনই বলতে চাই না। তবে বলব অনেক ক্ষেত্রে সবার সুখ সবাই সহ্য করতে পারে না। প্রায় সময়ই দুজন মানুষ পরিবার নিয়ে ভালো থাকতে গেলে তৃতীয় কোনো ঈর্ষাপরায়ণ অদৃশ্য শক্তি সেই সম্পর্কের মধ্যে বিষ ছড়িয়ে দেয়। আমাদের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এবার মাহীর কাছে প্রশ্ন, কে সেই তৃতীয় শক্তি? মাহী বললেন, প্লিজ এ বিষয়ে আর কিছু জানতে চাইবেন না। আমি ঘটনাচক্রে নানা কারণে অনুমান করতে পারছি, কিন্তু স্পষ্ট করে কারও নাম বলতে পারছি না। এখন আমরা দুজন পৃথক হয়ে গেলেও দুজনের জন্য দুজনের শুভকামনা রইল। তাঁর কাছে প্রশ্ন, এর আগেও তো একাধিকবার আপনাদের বিচ্ছেদের গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল এবং আপনি তা গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন তাই না? মাহী বলেন, দেখুন সব সংসারে মাঝেমধ্যে ঝড়ো হাওয়া বইবে এটা স্বাভাবিক। আমাদের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। তাই বলে বিচ্ছেদের মতো সিদ্ধান্ত নিতে হলো। আপনার বা অপু কি অন্য কোনো সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলে এই ভাঙন? দৃঢ়কণ্ঠে মাহীর দাবি ‘মোটেও না, আজ হয়তো আমার কথা কারোর বিশ্বাস নাও হতে পারে কিন্তু আগামীতে আমার কথার সত্যতা সবাই জানতে পারবেন। মাহীর কাছে জানতে চাইলাম, এতকিছুর পরও সমঝোতার কোনো সম্ভাবনা আছে কি? মাহী বললেন মোটেও না। কারণ দুজন দুজনের ভালোর জন্যই বিচ্ছেদের পথ বেছে নিয়েছি। তাঁর কাছে এবারের জানতে চাওয়া, আপনি তো ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন কিন্তু বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক যে প্রক্রিয়া মানে আইনগতভাবে কাগজপত্রে যে তালাক দিতে হয় তা কি করা হয়েছে? জবাবে মাহী বলেন, সবকিছুই তৈরি হয়ে গেছে। এখন আর এই সম্পর্কের জোড়া লাগানোর কোনো পথ খোলা নেই। মাহী অনুরোধ জানিয়ে বলেন, সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমরা যেখানেই থাকি আর যেভাবেই থাকি যেন ভালো থাকি। অপুর সঙ্গে আর সংসার করা না হলেও আমি আমরণ তাঁকে ভালোবেসেই যাব।  আমি চাই আমার সাবেক স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির প্রতি সম্মানবোধটা  বেঁচে থাকুক।

মাহীর ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-

‘এই পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষটার সঙ্গে থাকতে না পারাটা অনেক বড় ব্যর্থতা। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শ্বশুরবাড়ির মানুষগুলোকে আর কাছ থেকে না দেখতে পাওয়াটা, বাবার মুখ থেকে মা জননী, বড় বাবার মুখ থেকে সুনামাই শোনার অধিকার হারিয়ে ফেলাটা সবচেয়ে বড় অপারগতা। আমাকে মাফ করে দিও। তোমরা ভালো  থেকো।  আমি তোমাদের আজীবন মিস করবো।’

সর্বশেষ খবর