আমজাদ হোসেন
সত্যি বলতে এবারের ঈদে টিভি অনুষ্ঠান দেখা খুব একটা সম্ভব হয়নি। কারণ দুটি। প্রথমত, লেখালেখি নিয়ে ব্যস্ততা থাকায় সময় বের করতে পারিনি। দ্বিতীয়ত, এখন এত টিভি চ্যানেল যে কোনটা ছেড়ে কোনটা দেখব। তাছাড়া অনুষ্ঠানের মান নেই এবং বিজ্ঞাপনের আধিক্য। এ অবস্থায় অনুষ্ঠান দেখা কিভাবে সম্ভব। দেশীয় ভালো অনুষ্ঠানের অভাব এবং বিজ্ঞাপনের যন্ত্রণায় যদি আমাদের দর্শকদের ভারতীয় চ্যানেল দেখতে হয় এর চেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার আর কী হতে পারে। তারপরও বলব ভালো অনুষ্ঠান যে একেবারে হয় না তা কিন্তু নয়। তবে পরিমাণে খুবই কম। ঈদে সময় টিভিতে মোর্শেদুল ইসলামের অনুষ্ঠান সম্পাদকীয় দেখেছি। খুব ভালো লেগেছে। এ ধরনের অনুষ্ঠান বেশি করে হওয়া দরকার।
সুচন্দা
ঈদে টিভি অনুষ্ঠানের কৌলীন্য আগের মতো নেই। এর অনেক কারণ আছে। যেমন এক সময় শুধু বিটিভি ছিল। এ চ্যানেলটি বাছাই করা অনুষ্ঠান প্রচার করত। বিটিভি তাদের সেই ধারাবাহিকতা এখনো কিছুটা বজায় রেখেছে। যেমন এ চ্যানেলে সব সময়ই খ্যাতিমান টিভি ব্যক্তিত্ব হানিফ সংকেতের 'ইত্যাদি' ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটি প্রচার করে। হানিফ সংকেতের নাটকও এটিএন বাংলায় প্রচার হয় ঈদে। 'ইত্যাদি' ও তার নাটকে বরাবরই বিনোদনের মাধ্যমে দেশ ও সমাজ সংস্কারমূলক নানা মেসেজ থাকে। এ ধরনের অনুষ্ঠান চ্যানেলগুলো প্রচার করলে ভালো লাগবে নিঃসন্দেহে। এখন চ্যানেল বেড়েছে সত্যি, কিন্তু অনুষ্ঠানের মান উন্নত হয়নি। মানহীন অনুষ্ঠানের ছড়াছড়ি আর বিজ্ঞাপনের যন্ত্রণায় দর্শক অস্থির থাকে। তাই চাইলেও ঈদ অনুষ্ঠান দেখা সম্ভব হয় না। আমরা দর্শকরা ভালো অনুষ্ঠান দেখতে চাই। কর্তপক্ষকে এক্ষেত্রে আন্তরিক হতে হবে।
শহীদুল্লাহ ফরায়েজী
প্রতি ঈদে আমি চেষ্টা করি ঈদের অনুষ্ঠানগুলো দেখার। কিন্তু নানা ব্যস্ততার কারণে দেখতে পারি না। তবে এবার বেশ কিছু টিভি অনুষ্ঠান দেখেছি। নাটক ও অন্যান্য অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আমি সব সময় গানের অনুষ্ঠানগুলো দেখার চেষ্টা করি। প্রতিবারের মতো এবারও বিভিন্ন শিল্পীর নানা ধরনের গানের আয়োজন দিয়ে সাজানো হয়েছিল ঈদের অনুষ্ঠান। এবারও ওপার বাংলার কিছু গুণী শিল্পী আমাদের দেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে পারফর্ম করেছেন। তাদের পাশাপাশি আমাদের দেশের শিল্পীরাও ভালো অনুষ্ঠান করেছেন। আমি মনে করি এটি একটি ভালো উদ্যোগ। আমাদের দেশে শিল্পীরা এখন ওপার বাংলার চলচ্চিত্রে গান করছেন। এটি আমাদের জন্য ভালো সংবাদ। আমার বিশ্বাস তারা যদি তাদের গানের প্রতি আরও মনোযোগী হয় তারা আরও ভালো করতে পরবেন। আমাদের দেশের নাম আরও উজ্জ্বল হবে।
অপু বিশ্বাস
ঈদে নানা ব্যস্ততার ফাঁকে যতটা সম্ভব অনুষ্ঠান দেখেছি। এর মধ্যে চলচ্চিত্রবিষয়ক অনুষ্ঠান এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হানিফ সংকেতের 'ইত্যাদি' ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটি উল্লেখযোগ্য। 'ইত্যাদি' সব সময় ভালো লাগে। সব ব্যস্ততার ফাঁকে অনুষ্ঠানটি নিয়মিত দেখার চেষ্টা করি। ঈদে অনুষ্ঠানটি অন্যরকম ভালো লেগেছে। আশা করি এই ভালো লাগা আগামীতেও বজায় থাকবে। আসলে ঈদে টিভি অনুষ্ঠান বেশি করে দেখতে চাই। কিন্তু মানসম্মত অনুষ্ঠানের অভাব এবং বিজ্ঞাপন প্রচারের পরিমাণ অনুষ্ঠানের চেয়ে বেশি হওয়ায় ধৈর্য হারিয়ে ফেলি। এ অবস্থায় শুধু আমার ক্ষেত্রে নয়, সবার মুখে একই অভিযোগ। আমার প্রত্যাশা টিভি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করবে। ঈদে বেশি করে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান প্রচার করা দরকার। তা নাটক কিংবা ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান অথবা চলচ্চিত্রের অনুষ্ঠান হতে পারে। কারণ এ দিনটিতে দর্শক শুধুই আনন্দ চায়।