মিডিয়াপাড়ায় পা রাখার আগেই নিত্যনতুন বিতর্কে জড়িয়ে বেশ কয়েকবার আলোচনায় এসেছেন হালের অন্যতম অভিনেত্রী পরীমণি। কিছুতেই যেন বিতর্কের জাল থেকে বের হতে পারছেন না তিনি। গত রবিবার থেকে আবারও আলোচনায় উঠে আসেন এই অভিনেত্রী। শুধু আলোচনা নয়, তাকে ঘিরে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে মিডিয়াপাড়ায়। পরীমণির বেশ কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। রবিবার বিকাল পর্যন্ত আলোচনায় ছিল জনৈক ইসমাইল নামক ব্যক্তির সঙ্গে তার কয়েকটি ছবিকে ঘিরে। কিন্তু সূর্য ডুবতে না ডুবতেই ফের আলোচনায় আসে আরও একজনের নাম। উঠে আসে সৌরভ নামে পরীর আরেক স্বামীর কথা। রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয় এই ঘটনায়। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলে পক্ষে-বিপক্ষে নিয়ে তর্কবিতর্ক। এরই মধ্যে এগুলো উঠে আসে খবরের শিরোনামে। কিন্তু এসব খবরকে উড়িয়ে দিয়ে পরীমণিও মুখ খুলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কিন্তু সেই স্ট্যাটাসকে ঘিরেও শুরু হয় বিতর্কের ধারাবাহিকতা।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে পরীমণি বলেন, 'কিভাবে বলব শর্ট করে নাকি বিস্তারিত'। 'বুঝলাম না' এমন শব্দের প্রতিউত্তরে পরীমণি বলেন, 'শর্ট করে বলতে হলে বলতে চাই সব খবর ভিত্তিহীন ও মিথ্যাচার। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।'
'তাহলে একটু বিস্তারিত শুনতে চাই' বলতেই পরীমণি বলেন, 'ইসমাইল নামে যার সঙ্গে' ছবিটি শেয়ার করা হয়েছে তিনি আমার কাজিন। আমাকে ছোটবেলা থেকেই চিনেন। অনেক সময় গাইড লাইনও দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। ইচ্ছে করলে আপনারা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আর ছবির কথা বলছেন, ইসমাইলের সঙ্গে যে ছবি পোস্ট করা হয়েছে সেখানে অন্তরঙ্গ কোথায় পেলেন। আপনাদেরকে আবারও বলতে চাই আমরা যারা গ্রামে বড় হয়েছি তারা অনেকটাই সহজ সরল। আমাদের মনে কোনো কলুষতা নেই। তারপরও একে যদি খারাপ দৃষ্টিতে দেখতে যান সেটা একান্তই আপনাদের ব্যাপার।'
ঠিক আছে , তাহলে সৌরভের সঙ্গে যে ছবি প্রকাশ হলো তাহলে সেটাও কি অস্বীকার করবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে পরীমণি বলেন, 'সৌরভ ছোটবেলা থেকে পরিচিত। এমনকি বয়সেও আমার ছোট। তার বাবা মা আমাকে নিজ সন্তানের মতোই দেখতেন। কিন্তু তার সঙ্গে বিয়ে হয়নি।' তাহলে কি প্রেম করেছন? এবার কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পরীমণি বলেন, 'যে ছবি প্রকাশ হয়েছে এরমধ্যে কয়েকটি আমার। কিন্তু সৌরভের সঙ্গে (চুম্বনরত) ঘনিষ্ঠভাবে যে ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে তা আমার না।'
'ছবির মেয়েটি কিন্তু আপনার মতোই দেখতে, তাহলে স্বীকার করছেন না কেন?' এমনটা বললে এবার আরও একটু কর্কশ স্বরে বললেন, 'এদেশে অনেক কিছুই সম্ভব। কাটপেস্টও সম্ভব। কিন্তু ওই ছবির মেয়েটি আমি নই। প্রথমবার আমিও ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু (চুম্বনরত) ঘনিষ্ঠ ছবিটি দেখতে অনেকটা আমার মতো।'
'সবঠিক আছে তাহলে কাবিননামাকে অস্বীকার কারবেন কিভাবে?' 'হি. হি.. হি... ওই যে বললাম আমি ষড়যন্ত্রের স্বীকার। নিকাহনামাটি সম্পূর্ণ ফেক। কম্পিউটারের এই যুগে এসব জিনিস হরহামেশাই বানানো যায়। এটিও সেই রকম একটি কাজের ফলাফল। সুস্থ জ্ঞানে হলফ করে বলতে পারি কাবিননামাটি সম্পূর্ণ বানোয়াট।'
পরীমণি আরও বলেন, 'আজ থেকে দুই বছর আগেও ইসমাইলের ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় এগুলো নিয়ে কেউ উচ্চবাচ্চ্য করেনি। এখন আমার ক্যারিয়ারে ঈর্ষান্বিত হয়ে অনেকেই অনেক কিছু করছে। এটাও সেই ধারাবাহিকতার কু প্রচার। সময় হলে সবই জানতে পারবেন। আর একটি কথা না বললেই নয়, প্রত্যেকের উচিত্ অন্যের ব্যক্তিগত সম্পর্ক জাহিরের আগে একটু সতর্ক হওয়া। কিন্তু বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে খবরের শিরোনাম দেখে আমি নিজেও মাথা গরম করে ফেলেছিলাম। এর প্রভাব গিয়ে পরে আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসে। কাউকে আঘাত করার জন্য এইরকম স্ট্যাটাস দেইনি।' আপনি এই স্ট্যাটাসের জন্য দুঃখপ্রকাশ করছেন কিনা জানতে চাইলে পরীমণি বলেন, 'হুম... সেটাও বলতে পরেন। তবে আরও একবার বলতে চাই ইসমাইল বা সৌরভের সঙ্গে আমার কোনো বিয়ে হয়নি।'
এদিকে, এই ঘটনার পর থেকে পরীমণির পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে আলোচনার ঝড় চলছে ফিল্মপাড়ায়। কেউ কেউ বলছেন, যদি পরীর প্রেম-প্রণয়-বিয়ে হয়ে থাকে তাহলে সমস্যাটা কোথায়? এইটা একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে এইটাও ঠিক পরীর উচিত কারো সঙ্গে কথা বলার আগে বুঝেশুনে মাথা ঠাণ্ডা করে জবাব দেওয়া। হোক সেটা মুঠোফোন বা ফেসবুক স্ট্যাটাসে। তবে সত্য-মিথ্যা যাই হোক না কেনো পরীর এই বিয়ের খবরটি ক্রমেই বেগবান হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা