জিয়া পরিবারের সদস্যরা কীভাবে লোক-দেখানো দাতব্য সংস্থা (এতিমদের তহবিল)-এর নামে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে তা আত্মসাৎ করেছে, তা নিয়ে অনেকেই বিস্তারিত কিছু জানেন না। সাধারণ মানুষজন শুধু শুনেই আসছেন যে- জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা, অর্থাৎ এতিমদের টাকা মেরে দেওয়ার মামলা, এই নিকৃষ্ট ঘটনাটি আসলে কীভাবে ঘটানো হয়েছিল, জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে তার কিছু তথ্য সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।
১৯৯১ এর পরের কথা এটি। সৌদি আরবের ইউনাইটেড সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে দান হিসেবে বাংলাদেশের অসহায় দুস্থ মানুষদের কল্যাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সরকারি তহবিলে ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৮১ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সেই অর্থ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি ফান্ড থেকে ট্রান্সফার করে জিয়া অরফরফানেজ ট্রাস্ট নামের একটি ফান্ডে নিয়ে নেন। অথচ দেশে তখনও এতিম ও দুস্থদের জন্য অনেক জনমুখী দাতব্য সংস্থা বিদ্যমান ছিল। সেখানে একটা পয়সাও না দিয়ে নাম-কা-ওয়াস্তে চালু করা সাইনবোর্ড সর্বস্ব জিয়া অরফানেজ ফান্ডে অবৈধভাবে সেই টাকা স্থানান্তর করেন খালেদা জিয়া। জানলে অবাক হবেন যে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কোনো অস্তিত্বই ছিল না তখন।
প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা তোলার পর, তারেক রহমান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার নামে ২ লাখ ৭৭ হাজার টাকা দিয়ে ২.৭৯ একর জমি ক্রয় করে। এরপর ১৯৯৩ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত দীর্ঘ ১৩ বছরেও সেই জমিতে কখনোই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কোনো ভবন ও অফিস নির্মাণ করা হয়নি। এমনকি দেশের এতিমদের কল্যাণে সেই টাকা ব্যয় হওয়ার কথা থাকলেও; তারা সেই অর্থ কোনো কল্যাণমূলক কাজেও ব্যয় করেনি। টাকাগুলো ব্যাংকে অলস ফেলে রেখে, সেটাকে জামানত দেখিয়ে নিজেরা ব্যাংক ঋণ নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবসা বাণিজ্য করেছে।
দীর্ঘদিন জমে থাকার ফলে, এতিমদের জন্য বরাদ্দ সেই অর্থ সুদে-আসলে বৃদ্ধি পেয়ে ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা থেকে ৩ কোটি ৩৭ লাখ ৯ হাজার ৭৫২ টাকায় পরিণত হয়। তখন জিয়াউর রহমানের ভাতিজা মমিনুর রহমানের মাধ্যমে ছয়টি চেকে ৩ কোটি ৩০ হাজার টাকা গুলশানের প্রাইম ব্যাংকে ট্রান্সফার করে ফিক্সড ডিপোজিট করে তারেক রহমান। ২০০৬ সালের ১২ এপ্রিল, ১৫ জুন, ৪ জুলাই- এই তিন তারিখে চেক ছয়টির মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান কাজী সলিমুল হক/ কাজী কামালের নামে সেই এফডিআর (ফিক্সড ডিপোজিট) খোলা হয়।
সেসময় প্রধানমন্ত্রীর অফিসের তৎকালীন সচিব ও সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল সিদ্দিকীকে জিয়ার নামে খোলা সেই অরফানেজ ট্রাস্ট পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ড. সিদ্দিকী সেই ট্রাস্ট পরিচালনার জন্য কোনো নিয়মনীতি তৈরি না করে, তারেক রহমানের সরাসরি নির্দেশে জিয়া পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে আলাদা একটি ট্রাস্ট ফান্ড খুলে বসেন। খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকায়, তার ক্ষমতা ব্যবহার করে সেই ফান্ডের মাধ্যমে এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করতে সমর্থ হয় জিয়া পরিবারের সদস্যরা।
দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে সরকারি টাকার হিসাব না নিয়ে, কোনো রকমের অডিট প্রক্রিয়াকে পাশ কাটিয়ে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া তার স্বজনদেরকে এতিমদের জন্য বরাদ্দ কোটি কোটি টাকার অর্থ ভোগ করার সুযোগ করে দেন। ফলে সরকারের কোনো সংস্থাই এই অনৈতিক কাজ ও দুর্নীতি নিয়ে কথা বলার সাহস পায়নি। খালেদা জিয়া একজন প্রধানমন্ত্রী হয়েও নিজের ছেলে তারেকের মাধ্যমে এতিমদের জন্য বরাদ্দ দানের টাকা যেভাবে আত্মসাৎ করান, এরকম নিকৃষ্ট ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
(প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস)
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন
 
                         
                                     
                                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                        