বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধু সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন

-রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সুখী ও সমৃদ্ধিশালী দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। তাঁর সেই স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে গতকাল বিকালে শুরু হওয়া মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর ১০ দিনের অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি              বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে উন্নত দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে ইনশাআল্লাহ। তিনি  বলেন, আজ আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করছি। এ সময়ে রাজনীতিতে অনেক চড়াই-উতরাই ঘটেছে। কিন্তু রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন কতটুকু হয়েছে তা ভেবে দেখতে হবে। ব্যক্তির চেয়ে দল, দলের চেয়ে দেশ বড়- এটাই হচ্ছে রাজনীতির মূল আদর্শ। কিন্তু আজকাল যেন রাজনীতি উল্টো পথে হাঁটছে। আবদুল হামিদ বলেন, কিছু সুবিধাবাদী লোক রাজনীতিটাকে পেশা বানিয়ে ফেলেছেন। রাজনীতি আর পেশা এক জিনিস নয়। পেশার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি নিজের ও পরিবার-পরিজনের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন। আর রাজনীতি হচ্ছে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার একটি মহান ক্ষেত্র। তাই রাজনীতিকে পেশা  মনে  করলে দেশ ও জনগণের কথা ভুলে নিজের ও পরিবারের গন্ডির মধ্যেই ঘুরপাক খেতে হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মবার্ষিকীর এই দিনে তাই আমি রাজনীতিবিদদের আহ্বান জানাব, আসুন বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের দেশ ও জনগণের সেবায় নিয়োজিত করি। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বা ভোগ-বিলাস কোনো কিছুই বঙ্গবন্ধুকে তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু চাইলেই বিত্তবৈভবে নিজেকে উজাড় করে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি অবলীলায় এসব প্রত্যাখ্যান করে দেশ ও জনগণের অর্থাৎ বাঙালি ও বাংলাদেশের স্বার্থকেই জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছেন।

 

রাষ্ট্রপতি বলেন, পাকিস্তানের জেলে থাকাকালীন ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধুকে স্বয়ং প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান, জুলফিকার আলী ভুট্টো ও জেনারেল আকবরের সামনে হাজির করা হয়। ইয়াহিয়ার ধারণা ছিল বঙ্গবন্ধু তার কাছে এসে প্রাণের ভয়ে নরম হয়ে যাবেন এবং সেই সুযোগে তার কাছ থেকে আপসের প্রস্তাব পাওয়া যাবে। তিনি এই মানসে হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এলেন বঙ্গবন্ধুর দিকে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বললেন, দুঃখিত, ও হাতে বাঙালির রক্ত লেগে আছে। ও হাত আমি স্পর্শ করতে পারব না। মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়ে একমাত্র একজন মহানায়কই এমন সাহসী উচ্চারণ করতে পারেন। নিজের দেশকে ও নিজের মানুষদেরকে ব্যক্তি ও পরিবারের চেয়ে বেশি ভালোবাসলেই মৃত্যুকে জয় করে স্বাধীনতা ও মুক্তির গান গাওয়া যায়।

সর্বশেষ খবর