শিরোনাম
সোমবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

কলকাতায় খোঁজ নেই ই-অরেঞ্জের সোহেলের!

জামিন নিয়ে উধাও

কলকাতা প্রতিনিধি

কলকাতায় খোঁজ নেই ই-অরেঞ্জের সোহেলের!

ভারতে স্থানীয় এক আদালতে জামিন পেয়ে হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গেছেন আটক বাংলাদেশের বনানী থানার সাবেক পরিদর্শক (এসআই) শেখ সোহেল রানা। সীমান্ত পেরিয়ে তিনি ফের বাংলাদেশ বা অন্য কোনো দেশে চলে গেছেন, নাকি ভারতেই কোথাও আত্মগোপন করে রয়েছেন, এরও কোনো তথ্য নেই পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশের কাছে। বিষয়টিতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলায়। ইতোমধ্যে প্রতিটি সম্ভাব্য জায়গায় জেলা পুলিশের তরফে সন্ধান চালানো হচ্ছে। সতর্কতা নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেও।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে চ্যাংড়াবান্ধা আন্তর্জাতিক সীমান্ত-সংলগ্ন ভারতীয় ভূখন্ড থেকে বাংলাদেশ পুলিশের ওই কর্মকর্তাকে আটক করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এরপর স্থানীয় মেখলিগঞ্জ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় সোহেল রানাকে। ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে বাংলাদেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের মালিক সানিয়া মেহজাবীনের আপন ভাই এবং ওই প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক সোহেল রানার বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্টের ১৪/এ, ১৪/সি ধারাসহ ভারতীয় দন্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার গিমাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ৪৬ বছর বয়সী সোহেল রানাকে আটকের সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একাধিক ডেবিট কার্ড, মার্কিন ডলার, ইউরো, বাংলাদেশি মোবাইল সিম, মোবাইল ফোন এবং বেশ কিছু ওষুধ। প্রাথমিকভাবে ওই সময় বিএসএফ জানায়, ওই বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারত হয়ে নেপালের কাঠমান্ডু পাড়ি দেওয়া। পরে সোহেল রানাকে কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ মহকুমা আদালতে তোলা হয়। এরপর বেশ কয়েক দফায় পুলিশ রিমান্ড এবং জেল রিমান্ডে হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে আদালতের চার্জ গঠন করা হয়। শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন মেখলিগঞ্জ মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত বিচার বিভাগীয় বিচারক। গত বছর ৮ ডিসেম্বর তাকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দেন জলপাইগুড়িতে অবস্থিত কলকাতা হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ। অন্যতম শর্ত ছিল প্রতি সপ্তাহে একবার করে তাকে মেখলিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (অফিস ইনচার্জ) সঙ্গে দেখা করতে হবে এবং ওই পুলিশ কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া তিনি মেখলিগঞ্জ ছেড়ে বাইরে যেতে পারবেন না। কিন্তু জামিন পাওয়ার পরই তিনি সেই সব শর্ত ভাঙেন বলে অভিযোগ। সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা না করে পরিবর্তে মেখলিগঞ্জ থানাকে একটি ই-মেইল করে সোহেল রানা তার শারীরিক অবস্থার কথা তুলে ধরেন। সেখানে সোহেল জানান, তার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত জটিল। তাই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভালো হাসপাতালে চিকিৎসা করা দরকার। এর সপক্ষে তিনি মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাকালীন ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টসহ যাবতীয় নথি ই-মেইল করে মেখলিগঞ্জ থানার কাছে পাঠিয়ে দেন। এই বিস্তারিত তথ্য মেখলিগঞ্জ পুলিশের তরফ থেকে হাই কোর্টের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে আরও বলা হয়, বর্তমানে সোহেল রানা কোথায় অবস্থান করছেন তাও পুলিশকে জানাননি। এদিকে সোহেল রানার উধাও হওয়ার ঘটনার বিষয়টি জানাজানি হতেই জেলা পুলিশে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। জারি হয় সতর্কতা। সোহেলের সন্ধানে নতুন করে তৎপরতা শুরু হয়েছে জেলা পুলিশে। শুধু তা-ই নয়, সোহেলের জামিন বাতিলের আবেদন নিয়ে শিগগিরই জেলা পুলিশ উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর