প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে আগামী মার্চে ঘর পাচ্ছে আরও ৪০ হাজার ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার। মুজিববর্ষ উপলক্ষে এ ঘরগুলো দেওয়া হচ্ছে। এটা চতুর্থ ধাপের ঘর প্রদান। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প আশ্রয়ণ-২ এর আওতায় এ ঘরগুলো বিতরণ করা হচ্ছে। এর আগে তিন দফায় ১ লাখ ৮৫ হাজার ১২৯টি পরিবারকে জমিসহ ঘর প্রদান করা হয়। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন, ‘মুজিববর্ষে দেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালের জুন থেকে জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে দেশের সব ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের তালিকা প্রণয়ন করা হয়। ইতোমধ্যে তিন ধাপে প্রত্যেকটি উপকারভোগী পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে দুই শতক জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা ঘর দেওয়া হয়েছে।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত চতুর্থ ধাপের ঘরগুলো আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহ কিংবা দ্বিতীয় সপ্তাহে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হস্তান্তর করবেন। ইতোমধ্যে অনেক ঘর প্রস্তুত হয়েছে। কিছু বাকি আছে, চলতি মাসেই সেগুলোর কাজ শেষ বলে আমরা আশাবাদী।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন নোয়াখালী জেলার বর্তমান লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছা গ্রামে ভূমিহীন-গৃহহীন অসহায় ছিন্নমূল মানুষের পুনর্বাসন কার্যক্রমের যাত্রা শুরু করেন। তাঁর দেখানো পথেই বঙ্গবন্ধুকন্যা ১৯৯৭ সালের ১৯ মে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনের প্রবাল দ্বীপ এলাকায় একটি প্রকল্প শুরু করেন।প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রত্যেক মানুষের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার হচ্ছে তাদের বাসস্থানের সুযোগ পাওয়া। মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন, গৃহহীনদের ঘর দেওয়া হয়েছে। এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ভূমিহীন, গৃহহীন, হতদরিদ্র পরিবারের স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে জমি ও বাড়ির মালিকানা দেওয়া হয়। প্রতিটি ইউনিটে দুটি কক্ষ, একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট এবং একটি বারান্দা রয়েছে। আশ্রয়ণ-২-এর তৃতীয় ও চতুর্থ পর্বে বাড়িগুলোকে আরও টেকসই এবং জলবায়ু সহনশীল করতে সরকার খরচ বাড়িয়েছে এবং নকশায় পরিবর্তন এনেছে। ভূমিহীন, গৃহহীন, হতদরিদ্র পরিবারের স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে জমি ও বাড়ির মালিকানা দেওয়া হয়। প্রতিটি ইউনিটে দুটি কক্ষ, একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট এবং একটি বারান্দা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একটি মানবিক ও কল্যাণকামী রাষ্ট্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কল্যাণ, উন্নয়ন এবং মানবিক আচরণ। বিশ্বের উন্নত কোনো কোনো দেশ তাদের নাগরিকদের কল্যাণে কাজ করলেও অনেক সময় মানবিক হতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশ প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার দেশকে একটি মানবিক, কল্যাণকর রাষ্ট্রে পরিণত করার মহতী বেশ কিছু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে। এ মানবিক এবং কল্যাণকর কর্মসূচির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঠিকানাবিহীন, আশ্রয়হীন এবং গৃহহীন মানুষের জন্য আশ্রয়ণের ব্যবস্থা করা। একই সঙ্গে এসব মানুষের জন্য আশ্রয়ণের জন্য গৃহীত প্রকল্প এলাকায় তাদের কর্মসংস্থানে পশু পালন, মৎস্য চাষ, গবাদি পশু পালন, তাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য স্কুল, মক্তব, মাদরাসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সঙ্গে এসব এলাকায় বিদ্যুৎ, পানি, রাস্তাঘাটসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে।