বহুলপ্রত্যাশিত ও কাক্সিক্ষত প্রশাসনিক সংস্কারের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে বিচার বিভাগ। অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়োগ, পদায়ন, বদলিসহ যাবতীয় বিষয় নিয়ন্ত্রণে পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় গঠন এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। ‘সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়’ নামে প্রস্তাবিত এ সচিবালয়ের নিয়ন্ত্রণ প্রধান বিচারপতির হাতে দিয়ে গতকাল এ-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। সরকারের নীতি-পর্যায় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পৃথক সচিবালয় গঠনের মধ্য দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনিক কার্যক্রম নির্বাহী বিভাগের অধীন সাধারণ সচিবালয়ের পরিবর্তে নিজস্ব কাঠামোয় পরিচালিত হবে। এতে আদালতের কর্মী ব্যবস্থাপনা, বাজেট প্রণয়ন, প্রশিক্ষণ, অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিভিন্ন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা আরও শক্তিশালী হবে। অধ্যাদেশের খসড়া অনুযায়ী, এ সচিবালয়ের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ থাকবে প্রধান বিচারপতির হাতে। এটি সরকারের কোনো মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা দপ্তরের আওতাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন থাকবে না। সচিবালয়ের জন্য বাজেটে বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় অনুমোদনেও চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ করা হয়েছে প্রধান বিচারপতিকে। গতকাল বিকালে খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনের পর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে আইন ও বিচার বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ, উচ্চ আদালত সচিবালয়ের মাধ্যমে করবে। তিনি বলেন, বিচার বিভাগকে স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করার জন্য সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ হোক, এ আকাক্সক্ষা বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের মনে গত ২০-৩০ বছর ধরে রয়েছে। এটা নিয়ে আলোচিত হচ্ছে, অনেক পলিটিক্যাল পার্টি অনেক আশ্বাস দিয়েছে, অনেক কিছু বলেছে, আলটিমেটলি আমরা এখন একটা ভালো জায়গায় আসতে পেরেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এরই মধ্যে অধ্যাদেশের খসড়ায় উপদেষ্টা পরিষদ চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এখন বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় গঠনে শুধু গেজেট প্রকাশ বাকি রয়েছে। এ গেজেট প্রকাশ হলেই সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে পরবর্তী কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া যাবে।