বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

আমদানি কমেছে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে

কাজী শাহেদ ও রফিকুল আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

আমদানি কমেছে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আগে প্রতিদিন গড়ে চার শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক দেশে প্রবেশ করলেও এখন তা নেমে এসেছে ২৫০-৩০০তে। এসব ট্রাকে ভারত থেকে পাথর, গম, পিঁয়াজ, রসুন, ডালসহ আরও পণ্য আমদানি করা হয়। কিন্তু দুই মাস থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে ধস নামায় অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দরটির কার্যক্রম। পানামা কর্তৃপক্ষের দাবি, ভারতের অভ্যন্তরে কিছু নিয়ম পরিবর্তন হওয়ায় পণ্যবাহী ট্রাক কম আসছে। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরে এলসি সংকটের কারণে পণ্য আমদানি কমেছে। ডিসেম্বরের শুরু থেকেই বন্দরে প্রবেশ করছে না কোনো ফলের ট্রাক। পাথর, পিঁয়াজসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি হলেও তা পরিমাণে খুবই কম। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বন্দরের কয়েক শ শ্রমিক।

সোনামসজিদ স্থলবন্দর ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা কাজের আশায় বসে আছেন। কিন্তু বন্দরে যে পরিমাণ শ্রমিক আছে, সে অনুযায়ী আসছে না ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক। এতে কর্মহীন হয়ে সারা দিন বসে থেকে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে শ্রমিকদের। এ ছাড়া ডলার সংকটের কারণে এলসি না মেলায় সীমান্তের ওপারে আটকে আছে পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রাক। এমন সংকট চলতে থাকলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হুমকিতে পড়বে বলে মনে করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।  সোনামসজিদ স্থলবন্দর মূলত পাথর আমদানিনির্ভর একটি বন্দর। কিন্তু খাদ্যদ্রব্যে এলসি পাওয়া গেলেও পাথরে এলসি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বিপাকে পড়েছেন পাথর ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় থাকলেও তা না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

আমদানিকারক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘কিছুদিন ধরে বন্দর দিয়ে ফল আমদানি করতে পারি না। এতে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নভেম্বরের শুরুর ১৫ দিনে ভুট্টা ছাড়া অন্য কোনো পণ্যই আমদানি করতে পারিনি। ফল আমদানিকারকদের মতোই একই অবস্থা পাথর আমদানিকারকদের।’

স্থলবন্দরের শ্রমিক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এক মাস আগেও দৈনিক ৩-৫টি ভারতীয় ট্রাক থেকে পণ্য ওঠানামা করিয়েছি। কিন্তু এখন দিনে দুটি ট্রাকের পণ্য ওঠানামা করাতেই অনেক শ্রমিক। অলস বসে সময় পার করছি। তেমন কোনো কাজ নেই। এক মাস আগেও যেখানে ৫০০-৭০০ টাকা আয় করেছি, সেখানে এখন আয় মাত্র ২০০-২৫০ টাকা।’

সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ১২ বছর ধরে পণ্য ওঠা-নামানোর কাজ করেন সামসুল আলম। তিনি জানান, এভাবে কাজ করে সারা দিনের খরচ উঠছে না। ভারত থেকে আসা গাড়ির সংখ্যা অর্ধেকে নেমে গেছে।

এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা করে সমাধান করা জরুরি। সোনামসজিদ স্থলবন্দর পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের শ্রমিক ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম বলেন, আগে প্রতিদিন যেখানে ৪০০-৫০০ ট্রাক পণ্য আমদানি হতো, সেখানে এক মাস থেকে তা নেমেছে ১৫০-২০০ ট্রাকে। সোনামসজিদ আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান রাজু বলেন, ‘কিছু দিন থেকে আমাদের এলসিগুলো একটু দেরিতে হচ্ছে।  তবে আশা করা যাচ্ছে, শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।’

 

সর্বশেষ খবর