পুরো এলাকা ঘিরে ফেলেছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। তবু লস্কর–এ–তইবার এক জঙ্গিকে ঘাঁটি থেকে বের করা যাচ্ছিল না। গুলি চালালে সাধারণ মানুষের প্রাণ যেতে পারে। অবশেষে ছেলেকে বোঝানোর ভার নেন মা। মায়ের কাতর আর্তির সামনে হার মানতে হল ছেলেকে। নামিয়ে রাখতে হল হাতে ধরে রাখা আগ্নেয়াস্ত্র। আত্মসমর্পণ করতে হল ভারতীয় সেনার সামনে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সেনাদের কাছে খবর আসে সোপোরের একটি বাড়িতে লুকিয়ে আছে লস্কর-ই-তৈবা-র এক জঙ্গি। সঙ্গে সঙ্গে সেই জায়গা ঘিরে ফেলে সেনা বাহিনী। সেনার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, উত্তর কাশ্মীরের তুজ্জারের বাসিন্দা সেই জঙ্গির নাম উমাক খালিক মির ওরফে সমীর। তাকে অনেক বোঝানোর পরেও যখন সে আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয় না, তখন সেনার তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মীরের মা-বাবাকে অনুরোধ করা হবে তাকে আত্মসমর্পণ করার জন্যে বোঝাতে।
সেনার কাছ থেকে খবর পেয়ে তত্ক্ষণাত্ রাজি হয়ে যান মীরের মা। ছেলেকে বুঝিয়ে আত্মসমর্পণ করানোর দায়িত্ব তুলে নেন নিজের হাতে। সেনার অনুমতি নিয়ে তিনি ঢোকেন বাড়ির ভিতরে। অনেকক্ষণের চেষ্টা ও মিনতির সামনে হার মানতে হয় ছেলেকে।
অবশেষে মা’র সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে আসে মীর। সেনাদের হাতে তুলে দেয় একটি একে রাইফেল, তিনটি ম্যাগাজিন, তিনটি গ্রেনেড এবং একটি রেডিও। আত্মসমর্পণের পরে তাকে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে।
২৬ বছরের মীর চলতি বছরের মে মাসে নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে সে যোগ দেয় জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা-য়। সেনাবাহিনীর তরফ থেকে জানান হয়, ‘এভাবেই আমরা বিপথে যাওয়া তরুণ প্রজন্মকে আবার জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এক্ষেত্রে জয়ী হয়েছে মাতৃ স্নেহ।’
বিডি-প্রতিদিন/৪ নভেম্বর, ২০১৬/তাফসীর-২০