নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ বুহারির অসুস্থতা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। বেশ কিছুদিন হল শাসন কাজ থেকে ছুটি নিয়েছেন তিনি। মন্ত্রিসভার বৈঠক, জুম্মার নামাজেও তিনি অনুপস্থিত। তার আসলে কি হয়েছে, সেটা কেউ জানে না। প্রেসিডেন্টের বর্তমান শারীরিক অবস্থা নিয়ে সন্দিহান ও উদ্বিগ্ন গোটা দেশ।
এ উদ্বেগের মাত্রা আরো বাড়িয়েছেন বুহারির সহধর্মিণী আয়েশা বুহারি। এক টুইট বার্তায় তিনি উল্লেখ করেছেন, প্রেসিডেন্টকে আসলে যতটা অসুস্থ বলা হচ্ছে, তিনি ততটা অসুস্থ নন। ফার্স্টলেডির এ টুইট উদ্বেগের পাশাপাশি রহস্যের জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, ৭৪ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট যদি বেশি অসুস্থ না হন তবে শাসন কাজে অংশ নেয়া থেকে কেন বিরত আছেন?
বুহারির অসুস্থতার খবর প্রথম জানা যায় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে। ১৯ জানুয়ারি তিনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ৭ সপ্তাহের ছুটি নেন। লন্ডনের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন। ৫ ফেব্রুয়ারি পার্লামেন্টে ছুটি বাড়ানোর আবেদন করেন। এ আবেদন মঞ্জুরও হয়।
১০ মার্চ লন্ডন থেকে দেশে ফিরলেও শাসন কাজে অংশ নেননি। সবশেষ ২৬ এপ্রিল মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে টানা দ্বিতীয়বারের মত অনুপস্থিত ছিলেন বুহারি। ২৭ এপ্রিল রীতি মেনে জুম্মার নামাজেও অংশ নেননি। এর পর থেকেই তাকে নিয়ে দেশে-বিদেশে গুঞ্জন ছড়ায়।
সেই গুঞ্জনে রসদ দেন তার স্ত্রী আয়েশা বুহারি। মঙ্গলবার (২ মে) তিনি টুইট করেন, ‘প্রেসিডেন্ট বুহারি নিজে চলাফেরা করতে পারেন। ব্যক্তিগত কাজ নিজেই করতে পারেন। তাকে যতটা অসুস্থ মনে করা হচ্ছে, তিনি ততটা অসুস্থ নন।’ ফার্স্টলেডির এ টুইট প্রেসিডেন্টকে নিয়ে নতুন করে রহস্যের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই এ বিষয়ে ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুঁজছেন। ছড়িয়ে পড়েছে নানান গুজব।
দেশটির তথ্যমন্ত্রী লাই মোহাম্মেদ বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের অসুস্থতার বিষয়টি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। দেশবাসী এ বিষয়ে সচেতন রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ভিন্নভাবে ভাবার সুযোগ নেই।’ তবে বয়োজ্যেষ্ঠ প্রেসিডেন্ট কি রোগে আক্রান্ত সেই বিষয়ে তিনি কিছুই বলেননি।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে দ্রুত প্রেসিডেন্টের শারীরিক অবস্থার সবশেষ তথ্য দেশবাসীকে জানানোর অনুরোধ করে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন নাইজেরিয়ার সুশীল সমাজের ১৩ জন প্রতিনিধি। তাদের মধ্যে দেশটির ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রধান আনওয়াল মুসা, বর্ষীয়ান আইনজীবী ফেমি ফালানা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জিবরিন ইব্রাহিম রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ফার্স্টলেডি আয়েশা বুহারির সঙ্গে প্রেসিডেন্টের সম্পর্ক বরাবরই অম্ল-মধুর। নানা ইস্যুতে এর আগেও প্রকাশ্য বিরোধে জড়িয়েছেন তারা। গত অক্টোবরে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরকারের শীর্ষ পদগুলোতে রদবদল না আনলে ২০১৯ সালের নির্বাচনে স্বামীকে সমর্থন দেবেন না বলে হুমকি দেন আয়েশা। প্রতিক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট বুহারি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর জায়গা রান্নাঘরে, রাজনীতির মাঠে নয়।’
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/ ৩ মে ২০১৭/ ই জাহান