বান্দরবানের আলীকদমে ৩ পর্যটক নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় 'ট্যুর এক্সপার্ট' গ্রুপের প্রধান বর্ষা ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় তাকে আটক করার পর শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
জানা যায়, ৯ জুন ‘ট্যুর এক্সপার্ট’-এর তত্ত্বাবধানে ৩৩ সদস্যের একটি পর্যটক দল আলীকদম ভ্রমণে যায়। তারা দুটি দলে বিভক্ত হয়। একটি দল হাসান শুভর নেতৃত্বে ২২ জন নিয়ে তৈন খালের শামুকঝিরি ঝর্ণা দেখতে যায়। অপর দল বর্ষা ইসলামের নেতৃত্বে ১১ জন খেমচং পাড়া থেকে আন্ধারমানির পথে রওনা হয়।
বর্ষা ইসলামের দলে তালিকাভুক্ত গাইড থাকলেও হাসান শুভর দলে কোনো স্থানীয় গাইড ছিল না, যা প্রচলিত নিয়মের লঙ্ঘন। ধারণা করা হচ্ছে, প্রবল বর্ষণে শামুকঝিরি ঝর্ণার ঝিরিতে ভেসে গিয়ে ওই দলের ৩ সদস্য নিখোঁজ হন।
এর মধ্যে বৃহস্পতিবার মাতামুহুরী নদীর ফরেস্ট অফিস ঘাট থেকে শেখ জুবাইরুল ইসলামের এবং শুক্রবার তৈনখাল এলাকার আমতলী ঘাট থেকে স্মৃতি আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ‘ট্যুর এক্সপার্ট’-এর কো-এডমিন হাসান শুভ।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, শামুকঝিরি ঝর্ণা এলাকাটি বর্ষাকালে অত্যন্ত বিপদজনক হলেও এ দফায় 'ট্যুর এক্সপার্ট' গ্রুপ কোনো সরকারি অনুমতি নেয়নি। নিয়ম অনুযায়ী, স্থানীয় তালিকাভুক্ত গাইড ছাড়া ভ্রমণ নিষিদ্ধ হলেও হাসান শুভর দলে কোনো গাইড ছিল না।
এ বিষয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় আলীকদম থানায় বর্ষা ইসলামকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। পরে স্মৃতি আক্তারের পিতা হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে বর্ষাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা জহির উদ্দিন জানান, মামলায় বর্ষাকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, ২০২২ সালের ১২ আগস্টও 'ট্যুর এক্সপার্ট' গ্রুপের এক ভ্রমণে দুর্ঘটনা ঘটে। সেই সময় বর্ষার স্বামী ও গ্রুপের এডমিন মোহাম্মদ আতাহার ইসরাক রাফি নিখোঁজ হন এবং পরে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় প্রশাসন ও বাসিন্দারা বলছেন, 'ট্যুর এক্সপার্ট' গ্রুপ প্রায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পর্যটকদের নিয়ে দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে যান। ফলে এদের কর্মকাণ্ড নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন অনেকে। তারা বিষয়টি গভীরভাবে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/আশিক