দক্ষিণের মনোমুগ্ধকর সমুদ্রনগরী কুয়াকাটায় বসুন্ধরা শুভসংঘের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এক প্রাণবন্ত সাহিত্য আড্ডা। সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে মুসুল্লিয়াবাদ ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার মাঠে কুয়াকাটা পৌর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এই আড্ডা তরুণদের সাহিত্যচর্চা ও সৃজনশীল ভাবনার মিলনমেলায় পরিণত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বসুন্ধরা শুভসংঘ কুয়াকাটা পৌর শাখার সভাপতি মো. সাইদুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন অঞ্জুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহ জাহান সিকদার এবং প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুসুল্লিয়াবাদ ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) মো. হাবিল হোসেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন, সহকারী মৌলভী মাওলানা মুরতাজা আমিন এবং বসুন্ধরা শুভসংঘের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ। এছাড়া সাহিত্য সম্পাদক মো. আবিদুল ইসলাম, সদস্য ফয়সাল, নাসির ও মো. সোলায়মানসহ স্থানীয় শিক্ষক, সাংবাদিক, ছাত্রছাত্রী ও সংস্কৃতিকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে কবিতা পাঠ, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা ও মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন উপস্থিত সবাই।
আড্ডার মূল আকর্ষণ ছিল উইলিয়াম শেক্সপিয়র ও তাঁর বিখ্যাত নাটক হ্যামলেট নিয়ে বিশদ সাহিত্য আলোচনা।
প্রধান আলোচক মো. হাবিল হোসেন তাঁর বক্তব্যে শেক্সপিয়রের সাহিত্য প্রতিভা, মানবমনের গভীর অনুসন্ধান এবং হ্যামলেট-এর প্রতিশোধ, দ্বন্দ্ব ও মানবিক বেদনার দিকগুলো তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, শেক্সপিয়রের সাহিত্য মানবজীবনের প্রতিটি আবেগ ও সংকটকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছে, যা শতাব্দীর পর শতাব্দী পাঠককে ভাবতে শেখায়। তরুণরা যদি এই সাহিত্যচিন্তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়, তবে তাদের মনন ও সৃজনশীলতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
আড্ডায় অংশগ্রহণকারী তরুণ লেখক ও শিক্ষার্থীরা নিজেদের লেখা কবিতা ও গল্প পাঠ করেন। তারা সাহিত্যচর্চার প্রয়োজনীয়তা, পাঠাভ্যাসের অবক্ষয় এবং সৃজনশীল চিন্তার বিকাশ নিয়ে মতবিনিময় করেন।
প্রধান অতিথি মো. শাহ জাহান সিকদার বলেন, সাহিত্য শুধু বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ নয়; এটি মানুষের মন, সমাজ ও প্রকৃতির মধ্যে এক চমৎকার মেলবন্ধন ঘটায়। কুয়াকাটায় আমার দেখা এটি প্রথম সাহিত্য আড্ডা—যা নিঃসন্দেহে তরুণ প্রজন্মকে মানবিক ও সাংস্কৃতিক চেতনায় উজ্জীবিত করবে।
আয়োজকদের মতে, এ ধরনের নিয়মিত সাহিত্য আড্ডা কুয়াকাটার তরুণ সমাজে সৃজনশীল চেতনা, পাঠপ্রিয়তা ও মানবিক মূল্যবোধের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল