কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ধর্মীয় মূল্যবোধ, নৈতিক চেতনা ও মানবিক আদর্শ বিকাশে এক অনন্য ইসলামিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। কলেজের অডিটোরিয়ামে শনিবার অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, চিকিৎসক ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার সুধীজন উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মির্জা মোহাম্মদ তায়েবুল ইসলাম।
সেমিনারে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন নাগাইশ দরবার শরীফের পীর মাওলানা মোশতাক ফয়েজী, ইসলামী চিন্তাবিদ ও ইতিহাসবিদ শায়খ মুসা আল হাফিজ এবং ডা. নাবিল একাডেমির চেয়ারম্যান ডা. নাবিল।
মাওলানা মোশতাক ফয়েজী বলেন, নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর জীবন আমাদের জন্য সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত। তাঁর চরিত্র, সহনশীলতা ও ন্যায়পরায়ণতা একজন চিকিৎসকের নৈতিক আচরণ ও মানবসেবার মূলভিত্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। তিনি নবীর জীবনকর্মের নানা দিক তুলে ধরে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানান রোগীর প্রতি সহানুভূতি, সততা ও দায়িত্ববোধকে পেশার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখার জন্য।
শায়খ মুসা আল হাফিজ, তাঁর আলোচনায় নবী করিম (সাঃ) এর জীবনের সংগ্রামী অধ্যায়, যুদ্ধকালীন মানবিক নীতি ও শত্রুদের প্রতিও তাঁর দয়ার আচরণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, যুদ্ধেও নবী (সাঃ) মানবিক মূল্যবোধ বজায় রেখেছেন। আধুনিক যুগে চিকিৎসা ক্ষেত্রেও সেই মানবিকতা অপরিহার্য। একজন ডাক্তার কেবল রোগ সারান না, তিনি সমাজে ন্যায়, দয়া ও মমতার প্রতীক।
অন্যদিকে, ডা. নাবিল তাঁর বক্তৃতায় পারিবারিক দায়িত্ব, সমাজে নৈতিকতার অবক্ষয় এবং শিক্ষিত প্রজন্ম তৈরিতে অভিভাবকের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, একজন সন্তান যদি সুশিক্ষা, নৈতিকতা ও মানবিকতা অর্জন করে, তাহলে সে সমাজের জন্য এক আশীর্বাদ হয়ে ওঠে। একজন চিকিৎসক যখন পিতামাতার দায়িত্বশীল সন্তান হিসেবে বেড়ে ওঠেন, তখনই তার চিকিৎসা পেশায় নৈতিকতা দৃঢ় হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার, ইউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এ.এস. মোহাম্মদ মাসুম হাসান, ডার্মাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জহির উদ্দিন বাবর, ইএনটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এ.এস. শফিকুর রহমান, অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি বিভাগের ডা. মিনহাজ তারেকসহ অন্যরা।
সেমিনারের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ইসলামিক কুইজ প্রতিযোগিতা। এতে কলেজের বিভিন্ন বর্ষের বিজয়ী ১০ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। অনুষ্ঠানের মাঝেই অনুষ্ঠিত হয় ইসলামিক সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, যেখানে শিক্ষার্থীরা হামদ-নাত ও নৈতিক বার্তাবাহী সংগীত পরিবেশন করে।
বিডি প্রতিদিন/এএম