নেত্রকোনা একটি বজ্রপাত প্রবণ এলাকা হলেও বজ্রপাত নিরোধে নেই তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ। খালিয়াজুরী উপজেলায় ঘটা করে বজ্রপাত নিরোধী আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হলেও বাস্তবে গিয়ে পাওয়া যায়নি এর কোনো অস্তিত্ব।
জানা গেছে, হাওর অধ্যুসিত নেত্রকোনায় কয়েক কিলোমিটার জুরে এক একটা বিশাল হাওর। যেগুলোতে একমাত্র বোরো ফসল ফলে। ফসল কাটার সময় প্রতিবছরই কম বেশি বজ্রপাতে কৃষক মারা যান। শুধু কৃষকরাই নন জেলেসহ অনেক গাবাদি পশুরও মৃত্যু ঘটে।
এসব মৃত্যু ঠেকাতে সাবেক জেলা প্রশাসক কাজী আবদুর রহমানের তত্বাবধানে ২০২১ সনের ২৪ মে খালিয়াজুরী উপজেলায় একটি বজ্রপাত নিরোধী আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপনের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মো, কামরুল হাসান এনডিসি। ঘটা করে জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে উদ্বোধন করলেও বর্তমানে সেই নাম ফলকটিই বিলীন হয়ে গেছে। অথচ কেউ জানেনা কোন প্রকল্পের অধীনে এই ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিলো।
সরকারী বেসরকারী হিসাবে গত ২০১৯ সালে ৭ জন, ২০ সালে ১৫ জন, ২১ সালে ১৫ জন, ২২ সালে ৮ জন, ২৩ সালে ১২ জন ২৪ সালে ৬ জন এবং চলতি বছরের শুধু এপ্রিল চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল থেকে ১৭ মে পর্যন্ত ১০ জন মিলিয়ে মোট ৭৩ জন বজ্রপাতে নিহত হওয়ার তথ্য রয়েছে।
সরকারী ভাবে জেলায় বজ্র নিরোধক দণ্ড লাগানোর তথ্য পাওয়া গেছে ৩১ টির। তারমধ্যে সদরে খালিয়াজুরীতে মাত্র ২টি। কিন্তু এগুলোকেও অপর্যাপ্ত উল্লেখ করে অকার্যকর বলছেন সচেতন নাগরিকরসহ কৃষকরা। তারা মনে করেন আশ্রয় কেন্দ্রতে যেতে যেতেই মারা যাবে। প্রতি কিলোমিটার ধরে ধরে বজ্রপাত নিরোধক দণ্ড দিলে এই মৃত্যহার কমবে।
প্রবীণ সাংবাদিক ও সুজন নেতা শ্যামলেন্দু পাল জানান, আমরা জনউদ্যোগ থেকে অনেক সচেতনতা কার্যক্রম চালিয়েছি। শুনেছি প্রশাসনের কিছু উদ্যোগের কথা। কিন্তু সেসকল উদ্যোগ বাস্তবায়ন হতে দেখিনি।
জেলার ত্রাণ ও পুনবাসন কর্মকর্তা মুহাম্মদ রুহুল আমীন জানান, তিনি আসার আগেই তৎকালীন সময়ে বিভাগীয় কমিশনারের পরিদর্শনকালে নামফলকটি উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু পরে সেটির আর প্রকল্প নেয়া হয়নি। যে কারণে এটি এখন ছবিতেই সীমাবদ্ধ। যা ইতিমধ্যে বিলীনও হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
এদিকে জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জেলা পরিষদ থেকে চারটি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন জানিয়ে বলেন, সবই যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা করবে এমনটা নয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে হতে পারে। তবে ওটা কোথা থেকে হয়েছিলো খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল