বড় বড় দাগী আসামিদের গ্রেফতারের নজির বহুবার রেখেছেন ভারতের পুলিশ অফিসাররা। কিন্তু ভারতের বিতর্কিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের পালিত কন্যা হানিপ্রীতের হাতে কিছুতেই হাতকড়া পরাতে পারছেন না তারা। খুব কাছে এসেও পুলিশের জাল কেটে পালাচ্ছেন হানিপ্রীত। আর বারবার এ ঘটনা ঘটাতেই উঠছে প্রশ্ন। তবে কি সর্ষের মধ্যেই আছে ভূত? পুলিশের মধ্যে থেকেই কেউ বা কারা ক্রমাগত বাঁচিয়ে চলেছেন হানিপ্রীতকে?
কারাগারের ওপারে রাম রহিম। কিন্তু তার তথাকথিত পালিতা কন্যাকে ধরতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু কী করে একজন নারী বারবার পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে যাচ্ছে? সে প্রশ্নই এখন উঠছে। প্রথমে খবর আসে, নেপালে পালিয়েছেন হানিপ্রীত। সেই মতো তার নামে জারি করা হয় লুক আউট নোটিস। হানিপ্রীতের ছবিও ঝুলিয়ে দেওয়া হয় নেপালের থানায় থানায়। কিন্তু কোথায় কী!
পরে রাম রহিমের সাবেক গাড়ি চালক বলেন, হানিপ্রীত যদি সিরসাতেই লুকিয়ে থাকেন, তাহলে তিনি অবাক হবেন না। তার কথাকে অনেকটা সত্যি প্রমাণ করেই হানিপ্রীতের দেখা মেলে কাছেপিঠেই। একবার খবর রটে হানিপ্রীতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, হানিপ্রীতের খুব কাছাকাছি পৌঁছেছিল পুলিশ। কিন্তু কোনোভাবে ফসকে যায় শিকার। এরপর দিল্লিতে এক বোরখা পরা নারীকে হানিপ্রীত বলে সন্দেহ করা হয়। পুলিশ পিছুও নেয়। জোর তল্লাশি চলে। কিন্তু ফলাফল সেই শূন্য। প্রশ্ন উঠছে, কী করে হানিপ্রীত বারবার পালাচ্ছে? পুলিশের ভিতর থেকেই কেউ হানিপ্রীতকে না বাঁচালে এটা সম্ভব নয়।
রোহতক থেকে কেন হানিপ্রীতকে সিরসায় পালাতে দেওয়া হয়েছিল তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। জানা যাচ্ছে, এর মধ্যে উদয়পুর, বারমের, রাজস্থানেও গেছেন হানিপ্রীত। তার আইনজীবীর সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। কিন্তু যতবার পুলিশ তাকে ধরতে গেছে, ততবার দেখা গেছে একটু আগেই তিনি উধাও হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে পুলিশের ভেতর থেকেই খবর পাচার হচ্ছে বলে অনুমান। কোনো কোনো মহলের ধারণা, এ শুধু পুলিশের ব্যর্থতা নয়। পিছনে আছে রাজনৈতিক চাপ। হরিয়ানায় সরকার গড়তে রাম রহিম ব্যাপক সাহায্য করেছিলেন। ইতিমধ্যে ধর্ষণ মামলায় তাকে জেলে যেতে হয়েছে। কিন্তু বাবাকে আর বিরক্ত করতে চান না প্রভাবশালী নেতারা। আর তাই ছলে-কৌশলে বাঁচিয়ে দেওয়া হচ্ছে হানিপ্রীতকে। যেহেতু এই নারী বাবার খুব ঘনিষ্ঠ ও আদরের ছিলেন। তাই হানিপ্রীতকে কোনোভাবে ঘাঁটাতে চাইছেন না নেতারা। সেই চাপের মুখেই বারবার ব্যর্থ হতে হচ্ছে পুলিশকে।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন।
বিডি প্রতিদিন/২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭/এনায়েত করিম