চলতি রমজান মাসে ভারতের দিল্লির তিহার কারাগারে মুসলিম বন্দীদের সাথেই রোজা রাখছেন হিন্দু বন্দীরাও। এই কারাগারটির ২ হাজার ২২৯ মুসলিম সহ-বন্দীদের সাথেই ৫৯ জন হিন্দু বন্দীও রমজান মাসের শুরু থেকেই রোজা রাখছেন। ভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসী হলেও হিন্দু বন্দীরা প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, এই রোজা রাখার পিছনে তাদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব কিছু কারণ রয়েছে।
৪৫ বছর বয়স্ক এক হিন্দু নারী জানান, বাইরে থাকা নিজের ছেলের কল্যাণেই তিনি এই রোজা রাখছেন। অপহরণের মামলায় গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে এই কারাগারে বন্দী রয়েছেন তিনি।
অন্য আরেক নারী জানিয়েছেন কারাগার থেকে দ্রুত মুক্তি পাবার আশায় তিনি রোজা রাখছেন।
কয়েকদিন আগেই এই কারাগারে এসেছেন ২১ বছর বয়স্ক এক যুবক। তিনি জানিয়েছেন, তার মুসলিম সহ-বন্দীরা উপবাস রাখছেন এবং তাদের সাথে অংশ নিতেই তিনিও রোজা পালন করছেন।
দেশটির বৃহত্তম এই কেন্দ্রীয় কারাগারের অধীন একাধিক জেলে বন্দীর সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। এরমধ্যে ৯৭ জন নারী রোজা পালন করছেন।
গত রবিবার দিল্লির তাপমাত্রা ছিল ৪৫ ডিগ্রির আশপাশে। এই প্রচণ্ডে তাপদাহেও রোজা রাখা বন্দীদের জন্য বিশেষ ইফতারের আযোজন করেছে কারাগার কর্তৃপক্ষ। প্রতিটি কারাগারের সুপারদেরকে ইফতারে অংশ নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
তিহার জেলের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) অজয় কাশ্যপ জানান, রমজান মাস শুরুর আগে চলতি মাসের গোড়ার দিকে কারাগার কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই কেন্দ্রীয় কারাগারের অধীন প্রতিটি জেলেই কর্মকর্তারা ডিসপ্লে বোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছেন, সেখানে সূর্যাস্তের সময় উল্লেখ করা আছে। বন্দিরা যাতে সুষ্ঠুভাবে রোজা রাখতে পারেন তার জন্য খেজুর ও রুহ আফজা শরবত'র ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকালের নামাজ আদায়ের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যারা রোজা রাখছেন সেই সব বন্দীদের জন্য জেলের সময়সীমা শিথিল করা হয়েছে।
কারাগারের নিয়ম অনুযায়ী কোন বন্দীদের হাতে ঘড়ি পড়ার অনুমতি দেওয়া হয় না। সেক্ষেত্রে প্রতিদিন ভোরের সেহরির সময়টি বন্দীদের জানানোর জন্য একজন করে কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে বলেও জানিয়েছে তিহার কর্তৃপক্ষ।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা