ভারতে অবৈধভাবে বসবাসকারী এক বাংলাদেশি নাগরিকের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে দেশটির মহারাষ্ট্রের থানের এক স্থানীয় আদালত। প্রতারণা, ফরেনারস অ্যাক্ট এবং পাসপোর্ট আইনে অভিযুক্ত ৪২ বছর বয়সী মোহাম্মদ হাফিজ সর্দার নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিকের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়ে জেলা দায়রা বিচারক আর. এস. পাতিল ভোঁসলে এক আদেশে জানান, আধার কার্ডকে (পরিচয়পত্র) কোন মতেই নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসাবে বিবেচনা করা যাবে না।
এ প্রসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের একটি আদেশকে তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘মহামান্য কলকাতা হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণ করেছে যে আধার কার্ড কোন ব্যক্তির অধিকার, নাগরিকত্ব বা বাসস্থানের প্রমাণ দেয় না’।
পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১৬ সালের মার্চ মাস থেকেই কোনরকম বৈধ নথি বা পাসপোর্ট ছাড়াই থানের মিরা রোডে হাফিজ সর্দার নামে ওই বাংলাদেশি বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। ওই বছরেরই ডিসেম্বরে হাফিজসহ ১২ জন বাংলাদেশিকে আটক করে কোপরি থানার পুলিশ। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ৩৪ ধারা, পাসপোর্ট আইনের ৩এ, ৬এ এবং ১৪ এ ফরেনারস অ্যাক্ট’এ অভিযোগ দায়ের করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেখা হিওয়ারালে অভিযুক্ত হাফিজের জামিনের বিরোধিতা করে আাদলতে জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তি গুরুতর অপরাধ করেছে। তিনি বৈধ নথি বা পাসপোর্ট ছাড়া ভারতে বসবাস করছেন এবং তদন্ত চলাকালীন সময়ে হাফিজ ভুয়া ভারতীয় প্যান কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, স্কুল ট্রান্সফার সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। তাই তার জামিন যেন মঞ্জুর করা না হয়।
বিচারক এও জানান অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার বরাকর শ্রী মারোয়ারি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ইস্যু করা যে স্কুল ট্রান্সফার সার্টিফিকেটটি জমা দিয়েছে সেটিও ভুয়া। ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ সেটি ইস্যুই করেনি। অভিযুক্ত ব্যক্তি পাসপোর্ট, জন্মের সনদ, আধার কার্ড, প্যান ও স্কুল ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দিয়ে বিজয়া ব্যাঙ্কে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন বলে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সবকিছু বিবেচনা করে আদালত জানায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে যদি জামিনে মুক্ত করা হয় তবে তার পলায়নের সম্ভাবনা থেকেই যায়। তিনি যেহেতু বিদেশি নাগরিক হিসাবে উপস্থিত হয়েছেন তাই সমস্ত দিক বিবেচনা করে তার অপরাধের জন্য শাস্তির সুপারিশ করা হচ্ছে, তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়াটা যথোপযুক্ত হবে না।
বিডি প্রতিদিন/২৭ জুলাই ২০১৮/হিমেল