ভিগো। আটলান্টিকের কোল ঘেঁষা উত্তর-পশ্চিম স্পেনের ছোট্ট এক জনপদ। শান্ত জনপদ হিসেবে বেশ খ্যাতি আছে এই পৌর শহরের। কিন্তু গত এক দশক এই শান্ত জনপদ অশান্ত হয়ে উঠেছে। আরামের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছে পৌরবাসীর। দিন নেই রাত নেই সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখতে হচ্ছে তাদের সাধের গাড়িটি। কারণ চোখের আড়াল হলেই কে বা কারা তাদের গাড়িটি বিকল করে দিচ্ছে।
গত এক দশক ধরে তাদের এই যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে। হয়ত তারা গাড়ি রেখে বাড়ি বা কোন বিপণী বিতানের ভেতরে গেছেন ফিরে এসে দেখলেন গাড়ির কাচে অসংখ্য আঁচড়ের দাগ। কিংবা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন গাড়ির ইঞ্জিন বিকল। প্রথম দিকে একটি বা দুটি গাড়িতে এই সমস্যা হত। ফলে শহরবাসী এটাকে হালকাভাবে নিয়েছিল। তবে দিন যত গড়ায় গাড়ির সংখ্যা বাড়তে থাকে। টনক নড়ে সবার।
গাড়ির মালিকেরা লক্ষ্য রাখতে শুরু করে। কিন্তু যখন অপরাধী ধরা পড়ে তখন সবাই অবাক। কারণ ব্যক্তিটি আর কেউ নয় তাদেরই প্রতিবেশী অশিতীপর বৃদ্ধ হোসে অ্যান্টোনিও। এতদিন ধরে যাকে সবাই সম্মান আর শ্রদ্ধার চোখে দেখে এসেছেন সেই বৃদ্ধ করছেন এই কাজ?
পুলিশে দেওয়া হল তাকে। বয়স বিবেচনায় নিয়ে পুলিশ তাকে জেলে প্রেরণ না করে পাঠিয়ে দেয় মানসিক হাসপাতালে। তবে ডাক্তারেরা তার মানসিক চিকিৎসা করে কোন সমস্যা খুঁজে না পেয়ে ছেড়ে দেয়। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আবার একই কাজ করতে থাকে অ্যান্টোনিও। এভাবে গত এক দশকে কয়েক হাজার গাড়ির ক্ষতি সাধন করেছে অ্যান্টোনিও।
শুধু গত বছরে প্রায় এক হাজার গাড়ির কোন না কোন ক্ষতি সাধন করেছে এই বৃদ্ধ। এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ করেও প্রতিবারই স্প্যানিশ আইনে সুরক্ষা পেয়েছেন অ্যান্টোনিও। তবে এবার আর সুরক্ষা দেয়নি আদালত। প্রায় পাঁচ লাখ ইউরো জরিমানা করা হয়েছে তাকে। পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে মানসিক হাসপাতালে। ফলে যতদিন বাঁচবেন তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েই কাটাতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/আরাফাত