সুদূর বেলজিয়াম থেকে ভারত ভ্রমণে এসেছিলেন এক নারী। কিন্তু অভিজ্ঞতা এতটাই তিক্ত যে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি ভারত ছাড়তে বাধ্য হন। নিজের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা চিঠিতে লিখে বেলজিয়ান দূতাবাসেও পাঠিয়েছেন ওই নারী। আর এখন সেই চিঠি জমা পড়েছে দিল্লি পুলিশের দফতরে। অভিযোগ পাওয়ার পর ইতোমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
কিন্তু কী এমন হয়েছিল যে ২৪ ঘণ্টাতেই দেশ ছাড়তে বাধ্য হলেন বিদেশি পর্যটক? ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডট কমের খবর, ওই বেলজিয়ামের নারীর অভিযোগ, ভারতে আসার পর থেকে প্রতি পদে প্রতারিত হয়েছেন তিনি। প্রথমবার প্রতারণার শিকার হন এক অটোচালকের হাতে। নয়া দিল্লি রেলস্টেশনের বাইরে থেকে ওই অটো ভাড়া করেছিলেন তিনি। কিন্তু গন্তব্যে না গিয়ে অন্য এক জায়গায় তাকে নিয়ে যায় অটোচালক। বেলজিয়ামের নারী পর্যটকের অভিযোগ, সেখানে আগে থেকেই পুলিশের বেশে হাজির ছিলেন অটোচালকের এক পরিচিত ব্যক্তি। এরপর দু’জনে মিলে তাঁকে বোঝায়, তিনি যে গন্তব্যে যেতে চাইছেন সেখানে ভয়ঙ্কর বিক্ষোভ চলছে। তাই ওই এলাকায় যাওয়া সম্ভব নয়। পর্যটকের দাবি, মোবাইলে তাকে বিক্ষোভের ছবিও দেখায় ওই দুই ব্যক্তি। তার অভিযোগ, এরপর ওই দুই ব্যক্তি তাকে ভারত ছেড়ে চলে যাওয়ার কথাও বলে। ভয় দেখিয়ে বলে, এমনটা না হলে নাকি ওই নারীর সব গহনা চুরি হয়ে যাবে।
এখানেই শেষ নয়। পর্যটকের দাবি, এরপর ক্রমাগত ওই দু’জন বলতে শুরু করে তার ঠিক করা হোটেল রুমের বুকিংও নাকি ক্যানসেল হয়ে গেছে। ওই দু’জন জোর করে বেশি ভাড়ার হোটেল বুকিংয়ের চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ করেছেন ওই বেলজিয়ামের নারী। শেষ পর্যন্ত ৪০ ডলার খসিয়ে একটি রুম নিতে বাধ্য হন তিনি। কিন্তু এত টাকা দেওয়ার পরেও জানালা ছাড়া একটি ঘর জুটেছিল তার কপালে। অসাবধানতায় দরজা লক হয় যাওয়ায় ঘরেই আটকে পড়েন বিদেশি পর্যটক। কোনো মতে ফোন করে খবর দেন হৃষিকেশে থাকা নিজের এক বন্ধুকে। আর বন্ধুর পরামর্শেই বুঝতে পারেন ওই অটোচালক এবং তার সঙ্গী চরম ভাবে তাঁকে ঠকিয়েছে। ইতিমধ্যেই হোটেলের কর্মীরা এসে উদ্ধার করেন তাকে। এরপর আর এক মুহূর্তও অপেক্ষা করেননি তিনি। পরের বিমানেই ফিরে যান নিজের বেলজিয়ামে।
দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার মধুর বর্মা জানিয়েছেন, ইন্টারনেটের সাহায্যে প্রতারিত হওয়া পর্যটকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। পাশাপাশি এই ঘটনায় একটি এফআইআর-ও দায়ের করা হয়েছে। বেলজিয়াম দূতাবাসের পক্ষ থেকে যে অভিযোগ জানানো হয়েছে, তার ভিত্তিতে তদন্তও শুরু করেছে পুলিশ। পলাতক অটোচালক এবং তার সঙ্গী ওই দুই দালালের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
বিডি-প্রতিদিন/০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯/মাহবুব