ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে ‘স্মার্ট ফেন্সিং’ নির্মাণ প্রকল্পের আনুষ্ঠানি সূচনা করেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। মঙ্গলবার দেশটির অাসাম রাজ্যের ধুবড়ি জেলার বর্মণপাড়ায় বিএসএফ-এর বর্ডার আউটপোস্টে (বিওপি)-এই স্মার্ট ফেন্সিং-এর সূচনা করেন রাজনাথ।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন অাসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ও বিএসএফ কর্মকর্তারা।
‘স্মার্ট ফেন্সিং’এর এই প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বর্ডার ইলেক্ট্রনিক্যালি ডোমিনেটেড কুইক রেসপন্স টিম ইন্টারসেপশন টেকনিক’ সংক্ষেপে ‘বোল্ড-কিট’। এটি ‘কম্প্রিহেনন্সিভ ইন্টিগ্রেটেড বর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ (সিআইবিএমএস)-এর অধীনে একটি প্রকল্প। ইসরায়েলের মতো দেশও তাদের সীমান্ত সুরক্ষার জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।
এই স্মার্ট ফেন্সিং ব্যবস্থায় থাকছে শত্রুর ওপর সতর্ক নজর রাখতে মাটির নীচে অপটিক্যাল ফাইবার সিস্টেম, জলপথে সেন্সর বিশিষ্ট সোলার সিস্টেম এবং আকাশ পথে হাই রেজিউলেশন ক্যামেরা। এছাড়াও আন্তর্জাতিক সীমান্তে থাকবে লেজার ব্যবস্থা। এসবই নিয়ন্ত্রণ করা হবে ছয়টি নিরীক্ষণ কেন্দ্র থেকে, এজন্য বর্মণপাড়াতে বিএসএফ-এর প্রধান কার্যালয়ে ইউনিফায়েড কন্ট্রোল রুম-ও স্থাপন করা হয়েছে।
এই প্রযুক্তির ফলে কেবলমাত্র বিএসএফ-কে যে কোন ধরনের সীমান্ত নাশকতা রোধেই সহায়তা করবে না বরং বর্ষাকালে এই সীমান্ত বরাবর ‘রাউন্ড দ্য ক্লক’ অনুযায়ী বাহিনীর সদস্যদের শরীরি নজরদারি চালানো থেকেও কিছুটা রেহাই দেবে।
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের জম্মুতে পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘের দুইটি ‘স্মার্ট ফেন্সিং’ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। তাতে সাফল্যও পেয়েছে বিএসএফ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ লাগোয়া অাসামের ধুবড়ি জেলায় আন্তর্জাতিক জল সীমান্ত হওয়ায় দীর্ঘদিন থেকেই উন্মুক্ত অবস্থায় পড়েছিল। এই সীমান্ত দিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ভারত বিরোধী শক্তি, অনুপ্রবেশ, পাচারকারীদের সক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। তা ঠেকাতেই ধুবড়ি জেলায় জলসীমান্ত বরাবর প্রায় ৬১ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় এই স্মার্ট ফেন্সিং বসানো হচ্ছে। এই প্রকল্পটি চালু হলে এই জলসীমান্ত এলাকায় ব্রহ্মপুত্র ও তার শাখা নদীগুলির ওপর সেন্সরের মাধ্যমে গোটা এলাকাটি ডিজিটাল নজরদারির আওতায় চলে আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল