ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের সাংসদদের অর্থের বিনিময়ে কিনে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে কর্নাটকের সাংসদদের বিষয়ে এমন অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কংগ্রেসের হেভিওয়েট প্রবীণ নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে।
কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু কর্নাটকই নয়।
মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারও ভেঙে দেবে বিজেপি শিবির। কর্নাটকের মতোই কিনে নেবে এসব রাজ্যের সাংসদদের।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের মতোই এবার লোকসভায়ও বড় জয়ের মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গড়েছে বিজেপি। মূলত লোকসভার ফলাফলের পরই স্পষ্ট হয়, নরেন্দ্র মোদির সরকার কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থান রাজ্য সরকারে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে এবং শেষ পর্যন্ত সরকারই উৎখাত করবে।
এরপরই তালিকায় যোগ করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নাম। শুধু প্রশ্ন ছিল, কবে ও কখন গেরুয়া শিবির তাদের অপারেশন শুরু করবে। কিন্তু প্রায় এক মাসের মধ্যেই মন্ত্রী-বিধায়কদের পদত্যাগে পতন হতে চলেছে কর্নাটক সরকারের। ঠিক এই হালই হবে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের।
রাজ্যগুলোর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। রাজ্যটিতে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেস এখনও বেশ শক্তিশালী এবং বিধানসভায় এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রেখেছে।
কিন্তু সেখানেও লোকসভার পরই দলটিতে ভাঙন শুরু হয়েছে। দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে। এ রাজ্যে এক সময় পায়ের নিচে মাটি না থাকলেও তথাকথিত মোদি হাওয়ার জোরে এবার লোকসভায় ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছে বিজেপি।
পাঁচ বছর আগেও যেখানে ভোটের হার ছিল ১৫ শতাংশ। বিপরীতে রাজ্যের ক্ষমতাসীন তৃণমূলের ঝোলায় ৪৩ শতাংশ। কিন্তু দাঙ্গা-ফ্যাসাদ আর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা মমতার সরকারকে ক্রমেই কাবু করছে ফেলছে এবং শেষ পর্যন্ত উৎখাত হতে পারে তার সরকার।
মোদি-অমিত শাহ জুটির রাডারের মধ্যেই রয়েছে মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থান। মধ্যপ্রদেশেও রাজনৈতিক অস্থিরতার আলামত ইতিমধ্যে স্পষ্ট হয়েছে।
লোকসভা শেষ হওয়ার পরই ১৯৮৪ সালের শিখবিরোধী দাঙ্গায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের ভূমিকা নিয়ে ফের তদন্ত শুরু হয়েছে।
মামলা ফের রুজু হবে কি হবে না সে ব্যাপারে পুলিশি রিপোর্ট প্রায় চূড়ান্ত। এদিকে হিসাববহির্ভূত সম্পদের অভিযোগে সিবিআই তদন্তের মুখে পড়তে পারেন কমল নাথ।
মধ্যপ্রদেশে দলত্যাগের খেলা এখনও শুরু না হলেও কংগ্রেস এবার নিশ্চিত যে, শিগগির এখানেও আগ্রাসন শুরু হচ্ছে। রাজস্থানের ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটতে পারে। এরই মধ্যে কংগ্রেসের দুই প্রভাবশালী নেতা শচীন পাইলট ও মুখ্যমন্ত্রী অশোক দেহলটের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গেছে।
বিডি প্রতিদিন/কালাম