দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের টিকা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেন মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্য সহকারীরা। প্রায় দুই মাস ধরে তাঁরা ছয় দফা দাবিতে নানা কর্মসূচি নিয়ে সরব। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে টিকা কর্মসূচিতে। মাঠপর্যায়ের বিভিন্ন কর্মসূচির কোনো প্রতিবেদন জমা দেওয়া হচ্ছে না উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে। ফলে কর্মসূচি প্রণয়নে পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটছে। আর এর প্রভাব পড়ার উপক্রম হয়েছে শিশু স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে। এ নিয়ে চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা সিভিল সার্জনকে লিখিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিভিল সার্জন বুধবার এ নিয়ে করণীয় নির্ধারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর চিঠি দিয়েছেন।
বর্তমানে চট্টগ্রামে স্বাস্থ্য সহকারী, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে আট শতাধিক কর্মী কর্মরত। বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয়ভাবে ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন করছে।
জানা যায়, জন্মের পর থেকে দুই বছর পর্যন্ত শিশুদের বিসিজি, পেন্টা (ডিপিটি, হেপ-বি, হিব), ওপিভি, পিসিভি, আইপিভি ও এমআর (হাম-রুবেলা) টিকাগুলো পাঁচ দফায় দেওয়া হয়। তা ছাড়া বছরে দুবার ভিটামিন এ ক্যাম্পেইন পরিচালিত হয়। চলতি বছরই দেশে প্রথমবারের মতো টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) কার্যক্রম চালু করার কথা। চলছে এই ক্যাম্পেইন শুরুর নানা প্রস্তুতি। তৃণমূলে এসব কাজ সম্পাদন করেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। কিন্তু প্রায় দুই মাস ধরে তাঁরা টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করলেও এ নিয়ে কোনো প্রতিবেদন জমা দিচ্ছেন না। ফলে জাতীয় পর্যায়ে নীতিনির্ধারণে মাঠপর্যায় থেকে মাসিক ইপিআই রিপোর্ট, টালিশিট, স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিবেদন, গর্ভবতী তালিকা এবং ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সি শিশুদের টাইফয়েড রোগের ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে জাতীয়ভাবে শুরু হতে যাওয়া ক্যাম্পেইন চালানোর লক্ষ্যমাত্রাও জমা দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সভাপতি ফজলুল হক বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক ছয়টি দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি। দাবি মানা না হলে আন্দোলন চলমান থাকবে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘কিছু দাবি নিয়ে স্বাস্থ্য সহকারীরা মাঠে আন্দোলন করছেন। এ ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণে আমি গত বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়েছি।’