২২ অক্টোবর, ২০২০ ১০:৫৩

আজারবাইজানের দখলে নাগর্নো-কারাবাখের বেশ কিছু অঞ্চল

অনলাইন ডেস্ক

আজারবাইজানের দখলে নাগর্নো-কারাবাখের বেশ কিছু অঞ্চল

ফাইল ছবি

নাগর্নো-কারাবাখের বেশ কিছু অঞ্চলের দখল নিতে পেরেছে আজারবাইজান। বুধবার এক টেলিভিশন বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন আজারি প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ। অন্যদিকে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনইয়ান জানিয়েছেন, কূটনৈতিক আলোচনায় সমাধান সূত্র মিলবে না। 

ভিডিও বিবৃতিতে দেশবাসীর কাছে তার আবেদন, 'এই সংকটকালে সকলে হাতে অস্ত্র তুলে নিন এবং দেশের জন্য লড়াই করুন।' এক দিকে যখন তীব্র লড়াই অব্যাহত, তখন মস্কোয় ফের বৈঠকে বসেছেন আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। শুক্রবার তাঁদের বৈঠক করার কথা মার্কিন সচিব মাইক পম্পেও-র সঙ্গে।

মাঠে চেয়ে বেশি লড়াই চলছে মুখে। দুই পক্ষই আশ্রয় নিচ্ছে বাগাড়ম্বরের। নিজেদের ছোঁড়া গোলায় সাধারণ মানুষ মারা গেলেও দুই পক্ষই অপর পক্ষকে দুষছে যুদ্ধের নিয়ম না মানার জন্য। হামলা নিয়ে দুই পক্ষের পালটা দাবিতে সংকট আরো বাড়ছে। 

নাগর্নো-কারাবাখ নিয়ে যুদ্ধ বন্ধ হওয়ার এখনো পর্যন্ত কোনো সম্ভাবনা তৈরি হয়নি। দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতির চুক্তি ব্যর্থ হওয়ার পরে লড়াই আরও তীব্র হয়েছে। দুই দেশরই অভিযোগ, সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে। আজারবাইজানে একের পর এক শহর ধ্বংস করেছে আর্মেনিয়ার গোলা। অন্য দিকে আজারি ফৌজও নাগর্নো-কারাবাখের বিশাল এলাকা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। হাজার হাজার সাধারণ মানুষ গৃহহীন। আশ্রয়ের খোঁজে তারা পালাতে শুরু করেছেন। 

তারই মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঢুকে পড়েছে আর্মেনিয়া এবং নাগর্নো-কারাবাখেও। বহু মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হতে শুরু করেছেন। কিন্তু তাদের সাধারণ চিকিৎসা দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না।

এরই মধ্যে তুরস্ক ফের জানিয়ে দিয়েছে, আজারবাইজানকে যুদ্ধে সব রকম সাহায্যের জন্য প্রস্তুত তারা। প্রয়োজনে সৈন্য পাঠিয়ে সাহায্য করতেও তৈরি তেহরান। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান প্রথম থেকেই এই সংঘাতে আজারবাইজানকে সমর্থন করছিলেন। আর্মেনিয়া তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে অভিযোগও জানিয়েছে। কিন্তু তাতে এখনো পর্যন্ত কোনো ফল হয়নি।

প্রেসিডেন্ট ফের জানিয়ে দিয়েছেন, নাগর্নো-কারাবাখ আজারবাইজানের অবিভক্ত অংশ। আজারি ফৌজ সেই অংশ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। তুরস্ক সব রকম ভাবে তাদের সাহায্য করবে।

আর্মেনিয়ার প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, কূটনৈতিকভাবে এই সংঘাতের অবসান হওয়া মুশকিল। কারণ, আর্মেনিয়া কখনোই আর্মেনীয় মানুষের উপর অত্যাচার মেনে নেবে না। নাগর্নো-কারাবাখের আর্মেনীয় মানুষের উপর লাগাতার বোমা বর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে আজারবাইজান। আর্মেনিয়া তার জবাব দেবেই। 

দেশের মানুষের কাছে আর্মেনিয়া প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, 'সকলে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হোন। হাতে অস্ত্র তুলে নিন। আর্মেনিয়াকে রক্ষা করুন।' তবে একই সঙ্গে তেহরানের কাছেও বার্তা পাঠিয়েছেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী। তার বক্তব্য, তেহরান যদি শান্তিপূর্ণ সমাধানের রাস্তা তৈরি করতে পারে, তা হলে আর্মেনিয়া তা মেনে নেবে। 

বস্তুত, আর্মেনিয়া ব্রাসেলসেও প্রতিনিধি পাঠিয়েছে। ন্যাটো এবং ইইউ-র সঙ্গে আলোচনা করবেন সেই প্রতিনিধি। মস্কোতেও তৃতীয় দফার বৈঠক শুরু হয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যস্থতায় বৃহস্পতিবার দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফের বৈঠক শুরু করেছেন। শুক্রবার মস্কোতেই তাঁদের বৈঠক করার কথা মার্কিন সচিব মাইক পম্পেও-র সঙ্গে।

সূত্র : ডয়চে ভেলে।

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর