মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অবমাননার জেরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্র্যোঁকে খোলা চিঠি দিয়েছেন বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি ড. মোস্তফা সেরিক।
তিনি চিঠির শুরুতে লিখেছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আপনাকে সম্মান জানাই। তবে, আপনি এটার যোগ্য নন। কারণ আপনি সচেতন অথবা অবচেতনভাবে ইসলাম ধর্মের সর্বজনীন মূল্যবোধ সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়েছেন।
বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি ড. মোস্তফা সেরিক চিঠিতে লেখেন, ১৭৮৯ সালে সংগঠিত ফরাসি বিপ্লবের মন্ত্র ছিল সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও স্বাধীনতা। আমরা ভেবেছিলাম ফরাসি প্রেসিডেন্ট হিসেবে আপনি ইসলাম ধর্ম নিয়ে এরকম মন্তব্য করবেন না। কারণ ফরাসি বিপ্লব সংগঠিত হয়েছিল সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও স্বাধীনতার জন্য। আর এটি আপনি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন।
এই বিপ্লব অধিকার, স্বাধীনতা, সাম্যতা ও ভ্রাতৃত্বের নীতিগুলোর উপর ভিত্তি করে মানবতাবাদ, নবজাগরণ, শিক্ষা, গণতন্ত্র এবং মানবতার পথে যাত্রা করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল।
স্কুলশিক্ষক স্যমুয়েল প্যাটি ও নিস শহরে গির্জায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি দুঃখজনক। তবে আপনি এই দু’টি ঘটনাকে ‘ইসলামি বিচ্ছিন্নতাবাদ’ বলে উল্লেখ করেছেন। এই জন্য আপনার জন্য করুণা হয়। আপনি মুসলিম বিশ্বকে হতাশ করেছেন।
তিনি চিঠিতে মাক্রোঁকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মিডিয়া ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সুবিধা হলো খুব সহজেই মুসলিমদের চরিত্র হনন করা যায়। একই সঙ্গে তাদের ওপর বিভিন্ন ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়া যায়।
যেমন, চীনের উইঘুর মুসলিম, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম, কাশ্মীরের মুসলিম, জেরুজালেমের মুসলিমদের ওপর অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে। তারা বুঝে গিয়েছেন, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বসনিয়া কী ভয়ঙ্কর আচরণ করা হয়েছিল মুসলিমদের ওপর।
বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি ড. মোস্তফা সেরিক ফরাসি প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ্য করে চিঠিতে আরও লেখেন, আমি একজন ইউরোপীয় মুসলিম হিসেবে ভেবেছিলাম, উল্লিখিত ঘটনার জন্য আপনি ইসলাম ধর্মকে দায়ী করবেন না। কিন্তু আপনি সেই ঘটনার জন্য ইসলামকেই দায়ী করলেন।
আপনারা ইউরোপের সব সমস্যার মূলে ইসলামকে দায়ী বলে প্রচার করছেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি প্রকৃতপক্ষে এই হামলাগুলো ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে একটি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর