রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের অবস্থা ভয়াবহ বলে উল্লেখ করে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘গত ২০ দিনে যুদ্ধের মধ্যে আমরা বুঝতে পারছি সত্যিকার বন্ধু কারা।’
মঙ্গলবার ভার্চ্যুয়ালি কানাডার পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে জেলেনস্কি এ কথা বলেন।
জেলেনস্কির এই কথারই প্রতিধ্বনি করলো যেনো মেদিকা সীমান্তে সদ্য শরণার্থী হওয়া লুভর নামের ৮০ বছরের বৃদ্ধার কথায়। শেষ বিকেলে সূর্য ডোবার ঠিক একটু আগেই ৫ সদস্যের পরিবার ঢুকেছে ইউক্রেন থেকে। পরিবারের সদস্য বলতে লুভর, লুভরের ছেলের শ্বাশুড়ি, ছেলের বউ, দুই নাতি নাতনী। এই পরিবারের দিকে চোখ আটকে যায় কারণ এই বৃদ্ধা হাতে জেলেনস্কির ছবি ধরে কাঁদছিলেন আর বলছিলেন-হেল্প ইউক্রেন! ঠিক এই কথাটিই ২২ ফেব্রুয়ারি থেকেই জেলেনস্কি বারবার বলেছেন। ৮০ বছরের বৃদ্ধা জেলেনস্কির ছবি দেখিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বলছিলেন, এই আমার হিরো!
দোভাষীর সহায়তা নিয়ে বুঝতে পারা বাকি কথাগুলোর মানে হচ্ছে, আমার দেশে ছেড়েছি, কবে ফিরবে দেশে!
এই বৃদ্ধার মতো লক্ষ লক্ষ মানুষ যারা শরণার্থী হয়ে আছেন তাদের একটাই আশা বিশ্ব মোড়ল দেশগুলোর সরাসরি হস্তক্ষেপ। তবে হস্তক্ষেপ করে যুদ্ধ নিজের ঘরে আনার দায়ভার নিতে চায় না কোনো দেশই।
এজন্য ইরিনা নামের এক তরুণী বলছিলেন, পশ্চিমা বিশ্ব যা করছে সেটা লোক দেখানো! আমার দেশ শেষ করা হলেও তারা শুধু খাবার আর অস্ত্র পাঠিয়ে দায়িত্ব শেষ করে ফেলছে! অথচ এখন প্রয়োজন ছিল আমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধ করা।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ বলেছে, ইতোমধ্যে প্রায় ২৫ লক্ষ মানুষ দেশ ছেড়েছেন। ৪০ লক্ষ মানুষ দেশহীন হবেন বলে আশঙ্কা করছে তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলছে, এ পর্যন্ত অন্তত ১৪ লাখ শিশু ইউরোপের দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে প্রতি সেকেন্ডে ইউক্রেনের একটি শিশু শরণার্থী হয়েছে।
মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এলডার সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত ২০ দিনে প্রতিদিন গড়ে ৭০ হাজারের বেশি শিশু শরণার্থী হয়েছে। প্রতি মিনিটে ৫৫টি শিশু বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে। অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১টি শিশু শরণার্থী হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন