পাকিস্তানে ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে সব বাধা টপকে তার দল পিটিআইয়ের নেতাকর্মীরা রাজধানী ইসলামাবাদের জিরো পয়েন্টের কাছে পৌঁছেছে। সেখানে পিটিআই সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছে। এতে পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পিটিআই সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। অন্যদিকে, পুলিশের দিকে পাথর নিক্ষেপ করেছে পিটিআই কর্মীরা।
ফয়সালাবাদ থেকে ইসলামাবাদ এবং রাওয়ালপিন্ডিতে যাওয়ার প্রধান সড়কগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যাপক অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন যাত্রীরা। মোটরওয়ে এম-৩ এবং এম-৪-এর বিভিন্ন পয়েন্টে কন্টেইনার বসিয়ে মহাসড়কগুলোতে প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়াও, ফয়সালাবাদ থেকে শেখুপুরা এবং লাহোর রোডের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে।
পাঞ্জাবের বেশ কয়েকটি শহরে ইন্টারনেট পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে মুলতান, রাজানপুর, গুজরাট এবং ডেরা গাজি খান। এসব এলাকার বাসিন্দারা অনলাইন পরিষেবা ব্যবহারে সমস্যার কথা জানাচ্ছেন।
এদিকে, ইসলামাবাদের ডি-চকের পরিবর্তে অন্যত্র প্রতিবাদ জানানোর জন্য ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবিকে অনুরোধ জানিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্ডাপুর এবং পিটিআই নেতা ওমর আইউব। ডি-চকে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে এবং তার পরিবর্তে সাংজানিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে বুশরা বিবিকে রাজি করাতে চেয়েছিলেন তারা। তবে ডি-চকে প্রতিবাদ নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তেই অনড় ছিলেন বুশরা বিবি।
সূত্র অনুযায়ী, গান্ডাপুর এবং আইউবসহ পার্টির অন্যান্য নেতারা সরকারের প্রতিবাদ এবং ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে সাংজানিতে প্রতিবাদ করার বিষয়ে একমত হয়েছিলেন। কিন্তু বুশরা বিবি এই পরিকল্পনা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান। বুশরা বিবি ডি-চকের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছাই প্রকাশ করেন। সব পরামর্শ অগ্রাহ্য করে, তিনি সমর্থকদের এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন এবং কনভয়ের দায়িত্ব নিজেই গ্রহণ করেন।
এদিকে, পিটিআইয়ের বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠায় রাজধানী ইসলামাবাদে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ডি-চকের দিকে অবস্থান নিয়েছে সেনাবাহিনী।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে ২৪৫ ধারা কার্যকর করেছে, যার অধীনে সামরিক বাহিনী শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং বিশৃঙ্খলাকারীদের কঠোর হাতে মোকাবেলা করতে পারবে। এই বিজ্ঞপ্তি অনুসারে সেনাবাহিনী যেখানে প্রয়োজন সেখানে কারফিউ জারি করার ক্ষমতাও পেয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীকে বিশৃঙ্খলাকারী এবং সমস্যা সৃষ্টিকারীদের দেখামাত্র গুলি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
মূলত শ্রীনগর হাইওয়েতে এক মর্মান্তিক ঘটনার পর এ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে। সেখানে পিটিআই সমর্থকদের একটি গাড়ি রেঞ্জার্স সদস্যদের ওপর চালিয়ে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে চারজন রেঞ্জার্স সদস্য নিহত হন। এছাড়া এ দুর্ঘটনায় পাঁচজন রেঞ্জার্স সদস্য এবং দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। সূত্র: জিও নিউজ, ডন নিউজ
বিডি প্রতিদিন/একেএ