ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে রাতভর রাশিয়ার চালানো ভয়াবহ হামলায় অন্তত ৯০টি মিসাইল এবং ১০০টি ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় তীব্র ঠান্ডায় দিন কাটাচ্ছে। এটি এ বছর ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর রাশিয়ার ১১তম বৃহৎ আক্রমণ।
রাশিয়ার এই হামলার ফলে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। কেন্দ্রীয় ভিন্নিতসিয়া, ওডেসা এবং কিয়েভে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে এক ব্যক্তির অবস্থা গুরুতর। ২১৫,০০০ বাড়ি সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ।
বিমান হামলার সতর্কতা টানা ৯ ঘণ্টা ধরে চলায় অনেক বাসিন্দা মেট্রো স্টেশনগুলোতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের মতে, যেসব এলাকায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক, সেখানেই কেবল বিদ্যুৎ পুনঃস্থাপনের কাজ চলছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের প্রধান আন্দ্রিই এরমাক অভিযোগ করেছেন, রাশিয়া শীতকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। তিনি দাবি করেছেন, রাশিয়া পূর্ব থেকে মিসাইল মজুত করে রেখেছিল এই ধরনের হামলার জন্য। এছাড়া উত্তর কোরিয়াসহ রাশিয়ার মিত্ররাও তাদের সহায়তা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাওয়া অস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনের হামলার জবাব দিতেই এই আক্রমণ চালানো হয়েছে। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলাকে ‘অত্যন্ত নির্মম এবং সংকট বাড়ানোর’ পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আরও জানান, এই আক্রমণে ক্লাস্টার মিউনিশন ব্যবহার করা হয়েছে, যা সরাসরি বেসামরিক জনগণ এবং জ্বালানি অবকাঠামোকে লক্ষ্য করেছে।
রাশিয়ার এমন আক্রমণ ইউক্রেনের সংকট আরও ঘনীভূত করেছে। বিদ্যুৎ পুনঃস্থাপনের প্রচেষ্টা চললেও শীতকালের এমন সময়ে মানুষের দুর্ভোগ কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল