ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে শুক্রবার জেনেভায় যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও তার মিত্রদের সঙ্গে ইসরায়েলের উত্তেজনা চরমে এবং যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলের প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষা চলছে।
ইরানের পক্ষ থেকে আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক উপদেষ্টা মাজিদ তাখত-রাভাঞ্চি। এটি সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত বৈঠকের ধারাবাহিকতা। বৈঠকের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপ-মহাসচিব এনরিক মোরার সঙ্গে তাখত-রাভাঞ্চি এবং ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম গারিবাবাদি একটি প্রস্তুতিমূলক আলোচনা করেন।
এনরিক মোরার বক্তব্য অনুযায়ী, তারা ইরানের সামরিকভাবে রাশিয়ার প্রতি সমর্থন বন্ধ করা, পারমাণবিক ইস্যুর জন্য কূটনৈতিক সমাধান খোঁজা, আঞ্চলিক উত্তেজনা কমানো এবং মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা করেছেন।
বৈঠকের পর গারিবাবাদি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘স্বার্থপর এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ’ বন্ধ করা উচিত। তিনি গাজায় চলমান সংঘাতকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করে অভিযোগ করেন, ইউরোপ মানবাধিকার নিয়ে কোনো নৈতিক অবস্থান নিতে পারে না।
বৈঠকটি এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে লেবাননে একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার বলেছেন, ইরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে, সে জন্য ইসরায়েল ‘সবকিছু’ করবে।
ইরান সতর্ক করেছে, যদি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়, তবে তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র (পরোক্ষভাবে স্বীকৃত) ইরানের পারমাণবিক ক্ষমতা অর্জন রোধকে তাদের প্রতিরক্ষা নীতির শীর্ষ অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছে।
পশ্চিমা দেশগুলো অভিযোগ করছে, ইরান রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধে বিস্ফোরক ড্রোন সরবরাহ করছে। এই অভিযোগ আরও এক দফা ইরান-পশ্চিম উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা। তার প্রথম শাসনামলে ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ গ্রহণের নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল।
এই বৈঠক ইরান-পশ্চিম সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হতে পারে, তবে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে এ আলোচনার ফলাফল কী হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল