শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বোগানভিলের ৯৮ ভাগ বাসিন্দা স্বাধীন দেশের মর্যাদা চায়

বোগানভিলের ৯৮ ভাগ বাসিন্দা স্বাধীন দেশের মর্যাদা চায়

বিশ্বের নবীনতম দেশের মর্যাদা পেতে ভোট দিয়েপ্রণ দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বোগানভিলের বাসিন্দারা। বুধবার প্রকাশিত ফলে দেখা গেছে, ৯৮ ভাগ ভোটার স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। ব্যালটে অন্য অপশনটি ছিল পাপুয়া নিউগিনির কাছ থেকে স্বায়ত্তশাসন। এখন স্বাধীনতা বিষয়টি বাস্তবে রূপ দিতে পাপুয়া নিউগিনির সঙ্গে আলোচনায় বসবে ওই দ্বীপটির নেতারা। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে পাপুয়া নিউগিনির সংসদে। স্বাধীন দেশের মর্যাদা পেতে বোগানভিলের কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। পাপুয়া নিউগিনি দ্বীপপুঞ্জের অন্তর্গত ছোট আকারের দ্বীপ বোগানভিলে প্রায় ৩ লাখ মানুষের বাস। আয়তন ৯৩১৮ বর্গকিলোমিটার। মূল শহর বুকা। এখানের সরকারি ভাষা ইংরেজি। যদিও এখানে অন্তত ১৯ রকমের আঞ্চলিক ভাষার প্রচলন রয়েছে। ১৭৬৮ সালে ফরাসি পর্যটক লুই আন্তোনিও দ্য বোগানভিল প্রথম দ্বীপটির খোঁজ পান। তার নামেই নাম রাখা হয় দ্বীপটির। ১৯ শতকে বোগানভিলের দখল নেয় জার্মানি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এ দ্বীপেই সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুলেছিল জাপান। ১৯৭৫ সালে স্বাধীন দ্বীপপুঞ্জ হিসেবে পাপুয়া নিউগিনির আত্মপ্রকাশের আগে পর্যন্ত বোগানভিলের রাশ ছিল অস্ট্রেলিয়ার হাতে। আয়তনে ছোট হলেও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনীতিতে বোগানভিলের গুরুত্ব অনেক। বিশ্বের অন্যতম বড় তামার খনি পাঙ্গুনা রয়েছে এখানেই। সেখান থেকে বিশ্বের মোট উৎপাদিত তামার প্রায় ৭ শতাংশ আসে। এই খনির মালিকানা ঘিরে অতীতে বারবার রক্তাক্ত হয়েছে বোগানভিল। কাঁচামাল সরবরাহের জন্য ১৯৬৯ সালে বহুজাতিক শিল্পগোষ্ঠী রিও টিন্টোর সঙ্গে জোটবাঁধে পাঙ্গুনা। তখন পাপুয়া নিউগিনির বিদেশি মুদ্রা আয়ের একটা বড় অংশ আসত পাঙ্গুনার তামা বিক্রি করে। কিন্তু লাভের বখরা নিয়ে অচিরেই বিরোধ বাধে দুপক্ষের।

১৯৮৯ সালে পাপুয়া নিউগিনির সেনা ও বোগানভিলের বিদ্রোহীদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত চলতে থাকা সেই যুদ্ধে অন্তত ২০ হাজার স্থানীয় বাসিন্দা নিহত হন। নিখোঁজ হন বহু। শেষমেশ পাপুয়া নিউগিনি থেকে স্বাধীনতার দাবি জানান বোগানভিলের বাসিন্দারা।

নতুন দেশের মর্যাদা পেলেও বোগানভিল এখনই স্বাধীনভাবে অর্থনীতি পরিচালনার জন্য প্রস্তুত নয় বলে মনে করছে অস্ট্রেলিয়া। এ প্রসঙ্গে বোগানভিলের নেতা রেমন্ড মাসোনো জানিয়েছেন, গণভোটের ফল বেরোলেই খনি আইনে বদল এনে এলাকায় শান্তি ফেরানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এখন শুধু স্বাধীনতার অপেক্ষা।

সর্বশেষ খবর