বুধবার, ৩১ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

জীবন বাঁচাতে থাইল্যান্ডে ছুটছে ওরা

দুই হাজার মিয়ানমার নাগরিককে পুশব্যাক

জীবন বাঁচাতে থাইল্যান্ডে ছুটছে ওরা

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর আধুনিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে এক নারীর গুলতি হাতে প্রতিরোধের চেষ্টা -এএফপি

সামরিক জান্তার দমনপীড়ন থেকে জীবন বাঁচাতে এবার থাইল্যান্ডের দিকে ছুটছে মিয়ানমারের নাগরিকের দল। কিন্তু থাই কর্তৃপক্ষ তাদের ফিরিয়ে দিয়েছে (পুশ ব্যাকড)। ফলে মিয়ানমারের ওইসব নাগরিক এখন বিভিন্ন জঙ্গলে আত্মগোপন করে আছেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সামরিক জান্তা মিয়ানমারে বিমান হামলা শুরু করেছে। ধারাবাহিক বিমান হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। এসব বাস্তুচ্যুত মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে থাইল্যান্ডে প্রবেশ করেছিলেন। কিন্তু থাই কর্তৃপক্ষ তার পরপরই তাদের পুশব্যাক করেছে। অধিকার বিষয়ক কারেন ইনফরমেশন সেন্টার বলেছে, এমন বোমা হামলায় দেশের ভিতরে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন ২ হাজারের বেশি মানুষ। তাদের থাইল্যান্ড পুশব্যাক করার পর এখন জঙ্গলের ভিতর অবস্থান করছেন। একটি জাতিগত সশস্ত্র গ্রুপের দেওয়া তথ্যমতে, বিভিন্ন গ্রাম ঘেরাও করে সেখানে যুদ্ধবিমান থেকে বোমা হামলা চালিয়েছে সামরিক জান্তা। এর ফলে রবিবার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কারেন রাজ্যের হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন।

থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী কারেন রাজ্য। এখানকার কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) এই রাজ্যের বড় অংশে দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা সীমান্তের কাছে সেনাদের একটি পোস্ট হামলা করে উড়িয়ে দিয়েছে। এতে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন। তবে তারা সেনা সদস্য নাকি সাধারণ জনতা তা জানা যায়নি। কিন্তু প্রতিবেশী থাইল্যান্ড সীমান্তের দিকে দলে দলে পলায়নপর মানুষের ছুটে যাওয়া মিয়ানমারের সংকটকে আরও গাঢ় করবে। এমনিতেই দেশটি ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের পর থেকেই টালমাটাল অবস্থায় আছে। এ অবস্থায় রক্তাক্ত সামরিক দমনপীড়নের পর সেনাবাহিনী ওই বিমান হামলা চালিয়েছে। শনিবার জান্তা সরকারের নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা গুলি করে হত্যা করেছে কমপক্ষে ১১৪ জনকে। প্রায় দুই মাসের মধ্যে এদিনটিই ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। সোমবার তারা গুলি করে হত্যা করেছে কমপক্ষে ১৪ জনকে। এর মধ্যে রয়েছে শিশু ও যুবক। সব মিলে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের হাতে মিয়ানমারে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৫১০। এমন অবস্থায় মিয়ানমার ছাড়ার চেষ্টা করছে নাগরিকরা।

কেএনইউ বলেছে, সেনাবাহিনীর ধারাবাহিক বোমা হামলা থেকে বাঁচতে থাইল্যান্ড যাওয়ার জন্য সালউইন নদী পাড়ি দিয়েছে ৩ হাজার মানুষ। তাদের মধ্যে ২ হাজার জনকে ফেরত পাঠিয়েছে থাইল্যান্ড। অধিকার বিষয়ক গ্রুপ কারেন ওমেন্স অর্গানাইজেশন (কেডব্লিউও) কাজ করে করেন রাজ্যে এবং থাইল্যান্ডের শরণার্থী ক্যাম্পে। সামরিক জান্তার বিমান হামলার কথা নিশ্চিত করেছে তারা। তাদের দাবি বিমান হামলার ফলে কারেন রাজ্যের ১০ হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়েছেন। তার মধ্যে ৩ হাজার অবৈধ উপায়ে থাইল্যান্ডে পাড়ি দিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর