বুধবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সংযুক্ত আরব আমিরাতে শাহবাজ শরিফ

কাশ্মীর সমস্যার সমাধান ছাড়া ভারত-পাকিস্তান আলোচনা অসম্ভব

ভারতের সঙ্গে আমাদের তিনটি যুদ্ধ হয়েছে। এগুলো কেবল জনগণের জন্য আরও দুর্দশা, দারিদ্র্য ও বেকারত্ব নিয়ে এসেছে

কাশ্মীর সমস্যার সমাধান ছাড়া ভারত-পাকিস্তান আলোচনা অসম্ভব

কাশ্মীরে বেআইনি দখলদারিত্ব চলছে। এই অভিযোগ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের। তার মন্তব্য এই দখলদারিত্বের অবসান না ঘটানো পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে কোনো আলোচনা সম্ভব নয়। সোমবার দুবাইভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-অ্যারাবিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শাহবাজ এসব কথা বলেন। গতকাল সাক্ষাৎকারটি পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনেও সম্প্রচার করা হয়েছে। পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক দ্য ডনের খবরে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার দুই দিনের সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যান শাহবাজ।

সাক্ষাৎকারে শাহবাজ কাশ্মীরসহ আলোচিত সমস্যাগুলোর সমাধানে গুরুত্বের সঙ্গে আন্তরিক আলোচনায় আসতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আর এ ক্ষেত্রে ভারত ও পাকিস্তানকে এক টেবিলে আনতে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, ভারত নিয়ন্ত্রিত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরে জনসংখ্যা তত্ত্ব বদলে দেওয়ার ‘বেআইনি লক্ষ্য’ স্থির করেছে ভারত। এসব পদক্ষেপ উঠিয়ে না নেওয়া পর্যন্ত তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা নয়। কারণ কাশ্মীরিদের যে কোনো রকম স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নিয়েছে ভারত।

শাহবাজ আরও বলেন, ‘ভারতের নেতৃত্ব ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি আমার বার্তা হলো- আসুন আলোচনার টেবিলে। কাশ্মীরের মতো জ্বলন্ত ইস্যুগুলোর সমাধানে গুরুতর ও আন্তরিক আলোচনা করি। দিনের পর দিন এবং দিনের বাইরেও কাশ্মীরে মানবাধিকার লংঘন করা হচ্ছে।’

সাক্ষাৎকারে শাহবাজ বলেন, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ করে দেশটি ২০১৯ সালের আগস্টে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেয়। ‘ভারতে সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন’ উল্লেখ করে শাহবাজ বলেন, ভারত অর্থপূর্ণ আলোচনার জন্য প্রস্তুত, বিশ্বকে এই বার্তা দিতে তাদের অবশ্যই এটি বন্ধ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ বিশ্বকে মনে করিয়ে দেন, ভারত ও পাকিস্তান প্রতিবেশী দেশ। তাই একে অপরের সঙ্গে থাকতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস ও উন্নতি করব, নাকি একে অন্যের সঙ্গে ঝগড়া করে সময় ও সম্পদের অপচয় করব, সেটি আমাদেরই ঠিক করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের তিনটি যুদ্ধ হয়েছে। এগুলো কেবল জনগণের জন্য আরও দুর্দশা, দারিদ্র্য ও বেকারত্ব নিয়ে এসেছে। এসব যুদ্ধ থেকে আমরা শিক্ষা পেয়েছি, আমাদের প্রকৃত সমস্যা সমাধান করতে পারলে আমরা শান্তিতে থাকতে পারব। আমরা দারিদ্র্য বিমোচন ও সমৃদ্ধি অর্জন করতে চাই। আমরা জনগণকে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে চাই। বোমা ও গোলাবারুদের পেছনে সম্পদ নষ্ট করতে চাই না। আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে এই বার্তাই দিতে চাই।’

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। আমাদের প্রচুর অত্যাধুনিক অস্ত্র আছে। আল্লাহ না করুন, যদি একটি যুদ্ধ বেধে যায়, তাহলে কী হয়েছিল, তা বলার জন্য কেউ বেঁচে থাকবে?’ শাহবাজ শরিফ বলেন, সৌদি আরব বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ। বহু শতাব্দী ধরেই তাদের সঙ্গে সৌদির ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, যা অনন্য।

সর্বশেষ খবর