বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
কিয়েভ পৌঁছলেন বাইডেন

কাকপক্ষীও টের পেল না

কাকপক্ষীও টের পেল না

এই ট্রেনে ১০ ঘণ্টা সফর করে কিয়েভে পৌঁছেন বাইডেন

তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ফলে তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপের ওপরই সংবাদমাধ্যমের কড়া নজর থাকে- এটা স্বাভাবিক। আর তাঁর নিরাপত্তা সম্পর্কে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা বলয়ে থাকেন তিনি। সেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সোমবার পৌঁছে গেলেন যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে। যেখানে ক্ষণে ক্ষণে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ে। অথচ মার্কিন প্রেসিডেন্টের কিয়েভে না পৌঁছনো পর্যন্ত তাঁর এ সফর সম্পর্কে কাকপক্ষীও টের পায়নি।

আসলে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এই সফর নিয়ে চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছিল মার্কিন প্রশাসন। দুই সাংবাদিককে প্রেসিডেন্টের সফরসঙ্গী করা হলেও আসলে কী হতে চলেছে, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাঁরাও জানতে পারেননি। কীভাবে এই গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত অবশ্য ওই দুই সাংবাদিকের মাধ্যমেই তা সামনে এসেছে। বাইডেন যাত্রা শুরু করেন ওয়াশিংটন থেকে। স্থানীয় সময় রবিবার ভোররাত ৪টার দিকে ওয়াশিংটনের পার্শ্ববর্তী অ্যান্ড্রুজ বিমানঘাঁটি থেকে মার্কিন বিমানবাহিনীর বোয়িং ৭৫৭ উড়োজাহাজে চেপে বসেন ৮০ বছরের বাইডেন। এ উড়োজাহাজ সি-৩২ নামে পরিচিত। বাইডেনের সফরসঙ্গী ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদক সাবরিনা সিদ্দিকি জানান, রাত ২টা ১৫ মিনিটের মধ্যেই তিনি ও অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) আলোকচিত্রী ইভান ভুচি বিমানঘাঁটিতে পৌঁছে গিয়েছিলেন। বাইডেনের যে কোনো সফরে রেডিও, টেলিভিশন এবং সংবাদপত্রের মিলিয়ে মোট ১৩ জন সাংবাদিক থাকেন। কিন্তু এক্ষেত্রে মাত্র দুজনকেই ডাকা হয় হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে। আর তাদের কাছে প্রতিশ্রতি নেওয়া হয় এই সফর সম্পর্কে কোনো তথ্য ও সংবাদ আগে পাঠানো বা জানানো যাবে না।

ওয়াশিংটন থেকে রওনা দিয়ে সাত ঘণ্টা ওড়ার পর বাইডেনের বিমান প্রথম থামে জার্মানির রামস্টেইন শহরে। সেখানে মার্কিন সেনার সামরিক ঘাঁটিতে জ্বালানি ভরা হয় বিমানটিতে। সেখানে তেল নিয়ে বিমান সোজা পৌঁছায় পোল্যান্ডের জেজৌ শহরের জাসিওঙ্কা বিমানবন্দরে। পোল্যান্ডে পৌঁছানো পর্যন্ত সফরসঙ্গী দুই সাংবাদিকের একজনও মার্কিন প্রেসিডেন্টকে দেখতে পাননি। বিমানের ভিতরেও না, এমন কি বিমান থেকে নেমে লম্বা গাড়ির কনভয়ে যাওয়ার সময়ও না। এমন কি পোল্যান্ডে পৌঁছে বিমান থেকে নেমে যখন গাড়িতে করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউক্রেন সীমান্তের কাছে পোল্যান্ডের রেল স্টেশনে যাচ্ছেন, তখন তাঁর কনভয়ে কোনো ধরনের সাইরেন ব্যবহার করা হয়নি। পরে অনেকটা গোপনেই স্থানীয় সময় রাত ৯.১৫ নাগাদ ওই দুই সাংবাদিকসহ বাকিরা ট্রেনে ওঠেন। তখনো বাইডেনকে দেখতে পাননি দুই সাংবাদিক। এই রেলপথ ধরেই যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছায়।

এদিকে বাইডেনের কিয়েভ সফরকে কেন্দ্র করে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, ‘আমরা কয়েক ঘণ্টা আগে সফরের বিষয়টি রাশিয়াকে জানিয়েছিলাম, যেন কোনো সংঘাতের মধ্যে না পড়তে হয়।’

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর