রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমঝোতা হয়েছে। রবিবার চীনের পর্যটন শহর তিয়ানজিনে শুরু হওয়া রাশিয়া-চীন নেতৃত্বাধীন আন্তঃসরকার জোট সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে পুতিন নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন। গতকাল সম্মেলনের সমাপনী ভাষণে পুতিন বলেন, শিগগিরই ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান হবে বলে আশাবাদী তিনি। ভাষণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধ অবসানের জন্য চীন এবং ভারত উভয়েই অনেক দিন ধরে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছে। মস্কো এবং কিয়েভের সঙ্গে নিয়মিত এ ইস্যুতে আলাপ-আলোচনার পাশাপাশি একাধিকবার শান্তি প্রস্তাবও দিয়েছে। ভারত ও চীনের এসব প্রচেষ্টা সত্যিই খুবই প্রশংসার যোগ্য।’ ‘সম্প্রতি আলাস্কায় (ট্রাম্পের সঙ্গে) বৈঠকের সময় এ ইস্যুতে কিছু সমঝোতা যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে হয়েছে। আমি আশা করছি যুদ্ধাবসানের যে লক্ষ্য আমরা নিয়েছি, এসব সমঝোতা সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সহায়ক হবে।’
কৃষ্ণ সাগরের উপদ্বীপ ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা না করা এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য পদের জন্য কিয়েভের আবেদনকে ঘিরে কয়েক বছর ধরে টানাপোড়েন চলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। -রয়টার্স
এই টানাপোড়েনের একপর্যায়ে পুতিনের নির্দেশে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে শুরু হয় রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযান, যা এখনো চলছে। যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ দেশটির ওপর শত শত নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে। জাতিসংঘ এবং তুরস্ক, বেলারুশসহ বিভিন্ন দেশ কয়েক বার আলোচনা ও কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে এই যুদ্ধ থামানোর চেষ্টাও করেছে, কিন্তু যুদ্ধ থামেনি। তিয়ানজিনে এসসিও সম্মেলন উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে পুতিন বলেন, এই যুদ্ধের প্রধান কারণ হলো ন্যাটোর সম্প্রসারণের মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্ব ইউক্রেনকে তাদের বলয়ের মধ্যে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। যদি এতে তারা সফল হয়, তাহলে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য দেশগুলোকেও তারা ন্যাটো এবং ইউরোপীয় নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আসার প্রলোভন দেখানো শুরু হবে; আর যদি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্রগুলো ন্যাটোতে যোগ দেওয়া শুরু করে, তাহলে তা হবে রাশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার জন্য সরাসরি হুমকি।