১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৩:০৭

কুকুর-ইঁদুরের প্রস্রাব থেকে ছড়াচ্ছে ভয়াবহ রোগ, পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য অধিদফতরের সতর্কতা

অনলাইন ডেস্ক

কুকুর-ইঁদুরের প্রস্রাব থেকে ছড়াচ্ছে ভয়াবহ রোগ, পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য অধিদফতরের সতর্কতা

কুকুর-ইঁদুরের প্রস্রাব থেকে ছড়াচ্ছে ভয়াবহ রোগ, পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য অধিদফতরের সতর্কতা

গোটা বিশ্বের ন্যায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গও বিধ্বস্ত প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের দাপটে। এর মধ্যেই সেখানে নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এক মারণ রোগ, যা ছড়িয়ে পড়ছে কুকুর ও ইঁদুরের প্রস্রাব থেকে। এই রোগের নাম লেপটোস্পাইরোসিস।

ভরা ভাদ্রেও অঝোরে বৃষ্টি। রাস্তায় জমে জল। সেই জল পেরিয়ে বাড়িতে ঢুকেই বিপত্তি! অসাড় হয়ে গেছে পায়ের পেশি, চোখ টকটকে লাল, ঘাড় এতটুকু নড়াচড়া করছে না। শরীরে কী তবে লেপটোস্পাইরোসিস?

পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, রাস্তায় জমা পানিতেই মিশে আছে কুকুর কিংবা ইঁদুরের প্রস্রাব। আর মানুষের শরীরে প্রবেশ করে বাঁধাচ্ছে মারণ অসুখ।

পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য অধিদফতরের জারি করা নির্দেশনা এরই মধ্যে প্রতিটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, প্রতিটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের কাছে পৌঁছে গেছে। এ রাজ্যে এই মুহূর্তে অসুখ মাথাচাড়া না দিলেও লেপটোস্পাইরোসিসের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে যত্রতত্র। তাই সময় থাকতেই সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই অসুখে মৃত্যুহার যথেষ্ট। অসুখ হওয়ার আগেই তাই সর্তকতা নিতে চায় কর্তৃপক্ষ।

ডাইরেক্টর অব হেলথ সার্ভিস এবং ডাইরেক্টর অব মেডিকেল এডুকেশন যৌথ নির্দেশনায় বলছে, কুকুর-ইঁদুর কিংবা গবাদি পশুর শরীরে এক ধরনের স্পাইরাল ব্যাকটেরিয়ার দেখা মেলে। তার নাম লেপটোস্পাইরা। এর থেকেই ছড়ায় অসুখ। আক্রান্ত পশুর প্রস্রাবে থিকথিক করে সেই ব্যাকটেরিয়া, যা শরীরে লাগলেই বিপদ। পশুর প্রস্রাব ত্বকের সংস্পর্শে এলেই অসুখ ছড়ায়। ইঁদুর প্রস্রাব করে যেখানে সেখানে।

জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা অনির্বাণ দলুই জানিয়েছেন, বর্ষায় এবং বর্ষা পরবর্তী স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া এই অসুখ ছড়ানোর পক্ষে অনুকূল। শরীরে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশের পর উপসর্গ দেখা দিতে ৫ থেকে ১৪ দিন সময় লাগে। কোনও কোনও সময় নোংরা প্রস্রাব মাড়িয়ে আসার এক মাস পরেও অসুখ দেখা দিতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি চিকিৎসককে এই অসুখ নিয়ে সতর্ক হতে বলেছে সেখানকার স্বাস্থ্য অধিদফতর। চোখ লাল হওয়া, ঘাড় ‘স্টিফ’ বা শক্ত হয়ে যাওয়া, কোনও কারণ ছাড়াই আচমকা জন্ডিস, তলপেটে ব্যাথা এমন কোনও উপসর্গ দেখলেই টেস্ট করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ স্বাস্থ্য অধিদফতরের।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা বলছে, রুটিন ইউরিন পরীক্ষা, রক্তের টিএলসি, ডিএলসি, ইএসআর, প্লেটলেট কাউন্ট করলেই ধরা পরে অসুখ। এ অসুখে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় যকৃৎ। লিভার ফাংশন টেস্ট করালেও বোঝা যাবে শরীরে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করেছে কি-না।

কীভাবে চিকিৎসা হবে; সেটিও প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। উপসর্গ কম থাকলে ডক্সিসাইক্লিন দিতে হবে। প্রসূতিদের ক্ষেত্রে প্রতি ৬ ঘন্টা অন্তর অ্যামক্সিসিলিন দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। আট বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের ক্ষেত্রে শিশুর ওজন বুঝে অ্যামক্সিসিলিন সিরাপ দিতে বলা হয়েছে।

যারা নালা পরিষ্কার করেন, তাদেরই সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা, নোংরা ঘাটতে হয় এমন পেশায় থাকা লোকেদের গ্লাভস পরে কাজ করতে হবে। পরতে হবে পা ঢাকা জুতা। তথ্যসূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর