সংসদ ভবন এলাকার ৮ কবর সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু

জাতীয় সংসদ ভবনের চত্বর থেকে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানসহ আটজনের কবর সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মার্কিন স্থপতি লুই আই কানের নকশায় সংসদ ভবন এলাকায় কোনো কবর রাখার সুযোগ নেই। তাই গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এসব কবর সরিয়ে নেওয়ার জন্য ১৪ জুলাই একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠিয়েছে। কবরগুলো সংসদ ভবনের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে। এর মধ্যে সংসদ ভবনের উত্তর পাশে চন্দ্রিমা উদ্যানের ৭৪ একর এলাকার ৫ বিঘা জমিতে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর কমপ্লেক্স।
জিয়াউর রহমানের কবর মিরপুরের জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কবরস্থানে স্থানান্তরের প্রস্তাব রয়েছে। সেখানে দুজন বীরশ্রেষ্ঠর কবরও রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমান ছিলেন জেড ফোর্সের অধিনায়ক। এ ছাড়া সংসদ ভবনের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে রয়েছে আরও সাতটি কবর। ‘জাতীয় কবরস্থান’ নামে পরিচিত হলেও এসব কবরের অবস্থান আসাদগেট বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন মানিক মিয়া এভিনিউর পাশে। এখানে আছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান ও আতাউর রহমান খানের কবর। শাহ আজিজুর রহমান ১৯৭১ সালে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষে তার ভূমিকার জন্য সমালোচিত। এ ছাড়া এ স্থানে সাবেক মন্ত্রী মশিউর রহমান যাদু মিয়া এবং খান এ সবুর, সাহিত্যিক-সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমদ ও তমিজ উদ্দিনসহ সাতজনের কবর রয়েছে।
১৯৬১ সালে ২০০ একর জমির ওপর রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় সংসদ ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। কয়েক দফা বন্ধ থাকার পর ১৯৭৩ সালে ফের নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। ১৯৭৯ সালে নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়। স্থপতি লুই কান দৃষ্টিনন্দন এ ভবনের নকশা প্রণয়ন করেন। ১৯৮০ সালের ৩০ মে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হলে তৎকালীন সরকার তাকে জাতীয় সংসদের উত্তর দিকের সবুজ চত্বরে সমাহিত করে। সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তাগিদের কারণে এসব কবর সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। গত সপ্তাহের একনেক বৈঠকেও প্রধানমন্ত্রী এসব কবর সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চান। তার তাগিদের পর নড়েচড়ে বসে গণপূর্ত অধিদফতরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ। এর আগে সংসদ ভবনের পূর্ব সীমানার পেট্রল পাম্পটি সরিয়ে নেওয়া হয়। দৃষ্টি আর্কষণ করা হলে গণপূর্ত অধিদফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হাশেম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘লুই আই কানের মূল নকশার পরিবর্তন করে জিয়াউর রহমানসহ আট কবর গড়ে তোলা হয়। আমরা মূল নকশার সঙ্গে মিল রেখেই সব কবর সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’