শনিবার, ২২ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

বিপদসংকুল বিশ্বঐতিহ্য ঘোষণার সুপারিশ সুন্দরবনকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুন্দরবনকে বিপদসংকুল বিশ্বঐতিহ্য ঘোষণার জন্য প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেটিভ অব নেচার (আইইউসিএন) সুপারিশ করেছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন ও রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসভূমি সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশ যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় আইইউসিএন এ সুপারিশ করে। সম্প্রতি জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানবিষয়ক সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস এডুকেশনাল, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশনের (ইউনেস্কো) কাছে এ সুপারিশ করা                 হয়েছে।

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে আগামী ৩০ জুন থেকে ১০ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য ইউনেস্কোর বিশ্বঐতিহ্যবিষয়ক সম্মেলনে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আইইউসিএন ইউনেস্কোর পরামর্শক হিসেবে কাজ করে।

গত ৭ জুন আইইউসিএন তাদের ওয়েবসাইটে সুন্দরবন নিয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিপদসংকুল বিশ্বঐতিহ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের সুন্দরবন, মেক্সিকোর দ্বীপপুঞ্জ ও ক্যালিফোর্নিয়ার উপসাগরীয় এলাকা ও উত্তর মেসিডোনিয়ার ওহরিড অঞ্চল। সুন্দরবন প্রসঙ্গে বলা হয়, বিশ্ব ঐতিহ্যের স্পর্শকাতর এলাকায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বাণিজ্যিক স্থাপনার কারণে সুন্দরবন হুমকির মুখে রয়েছে। এ অঞ্চলটি ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ও রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসভূমি হিসেবে পরিচিত। সুন্দরবনের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ না করেই সেখানে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সুন্দরবনে জাহাজের যাতায়াত ও নদীতে ড্রেজিংসহ নানা কারণে সেখানের প্রাকৃতিক পরিবেশ রয়েছে হুমকির মুখে। সারা দেশে মেরুদন্ড ও অমেরুদন্ডী  প্রাণীর আনুমানিক মোট প্রজাতি ১১ হাজার ৮০০। এর মধ্যে সুন্দরবনে রয়েছে ২ হাজার ২০০। সারা দেশে চিহ্নিত প্রজাতির সংখ্যা ৭ হাজার ৯৭৩। এর মধ্যে সুন্দরবনে রয়েছে ১ হাজার ৫১৫। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন ও রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসভূমি সুন্দরবনকে ১৯৯৭ সালে বিশ্বঐতিহ্য ঘোষণা করে ইউনেস্কো। জাতিসংঘ কৃষি ও খাদ্যবিষয়ক সংস্থা এফএওর হিসাবে দেশে বনভূমি ১৫ হাজার ২০০ বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে সুন্দরবন ৬ হাজার বর্গকিলোমিটার। তবে এ সুন্দরবন ২ হাজার বছর আগে ২৫ হাজার বর্গকিলোমিটার ছিল। সুন্দরবনের মোট উদ্ভিদ প্রজাতির সংখ্যা ৩৩৪টি। লতাগুল্ম থেকে শুরু করে মাঝারি ও উঁচুসব ধরনের বৃক্ষই সুন্দরবনে রয়েছে। এক সময় সুন্দরবনে ফলদ বৃক্ষও প্রচুর ছিল। লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় এ ফলদ বৃক্ষ কমে গেছে। বিশ্বে মোট ৪৮ প্রজাতির শ্বাসমূলীয় বৃক্ষ রয়েছে। যার ১৯ প্রজাতিই সুন্দরবনে দেখা যায়। এদের মধ্যে সবচেয়ে সেরা বা পরিণত বৃক্ষ হিসেবে সুন্দরীকে মনে করা হয়। সুন্দরবনের ১১ শতাংশ এলাকাজুড়ে রয়েছে এ সুন্দরীগাছ।

সর্বশেষ খবর