ছেলে হোক মেয়ে হোক দুটি সন্তানই যথেষ্ট। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সরকার আপাতত এই নীতিতেই থাকছে। আজ বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালন উপলক্ষে গতকাল সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের আইইএম (ইনফরমেশন, এডুকেশন অ্যান্ড মোটিভেশন) ইউনিটের পরিচালক আশরাফুরন্নেছা। সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘টোয়েন্টি ফাইভ ইয়ারস অব দ্য আইসিপিডি : অ্যাসেলারেটিং দ্য প্রমিজ’। বাংলায় ‘জনসংখ্য ও উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ২৫ বছর : প্রতিশ্রুতির দ্রুত বাস্তবায়ন’। তিনি বলেন, আগামী ১২-১৪ নভেম্বর কেনিয়ার নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত হবে নাইরোবি সামিট। এই সামিটের সামগ্রিক প্রতিপাদ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবারের বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে। স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ১৯৯৪-২০১৯ সাল পর্যন্ত ২৫ বছরে বিশ্বব্যাপী মা ও শিশু স্বাস্থ্য কার্যক্রমে লক্ষণীয় অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে ১৯৯৪ সালে যেখানে মাত্র ১৫ শতাংশ নারী আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করত, বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৭ শতাংশ হয়েছে। বাংলাদেশে এ হার বর্তমানে ৬১ দশমিক ৬ শতাংশ। তিনি বলেন, ২৫ বছর আগে স্বল্পোন্নত দেশে প্রতি এক হাজার নারীর মধ্যে আটজন নারী গর্ভকালীন বা প্রসবকালীন সময়ে মারা যেত। বর্তমানে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। ২০০৪ সালে ছিল ৩ দশমিক ২০ জন, যা বর্তমানে কমে ১ দশমিক ৬৯ হয়েছে। স্বল্প আয়ের দেশে ২৫ বছর আগে একজন নারী কমপক্ষে ছয়টি সন্তান জন্ম দিত, যা বর্তমানে চার-এর নিচে নেমে এসেছে।
বাংলাদেশে এ হার বর্তমানে ২ দশমিক শূন্য ৫ জন। স্বাস্থ্য সচিব বলেন, এসব অর্জন সত্ত্বেও কায়রোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আরও এগিয়ে যেতে হবে এবং সেই সঙ্গে কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে। তিনটি বিষয় বা শূন্য এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, পরিবার পরিকল্পনার তথ্য ও সেবার অপূর্ণ চাহিদার হার শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা। দ্বিতীয়ত, কোনো নারী সন্তান জন্মদানকালে মারা যাবে না অর্থাৎ প্রতিরোধযোগ্য মাতৃমৃত্যুর হার শূন্য। তৃতীয়ত, মেয়ে ও নারীর প্রতি সহিংসতা ও যৌন হয়রানির প্রবণতা বন্ধ হওয়া। সচিব জানান, বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে আজ সকাল সাড়ে ৮টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা এবং সকাল সাড়ে ১০টায় ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে।