বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
জেলার রাজনীতি গোপালগঞ্জ

শুধুই আওয়ামী লীগ নেই বিএনপি

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জ জেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি গতিময় ও সুসংগঠিত। বিএনপির রাজনীতি চলছে ঢিমেতালে। দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায়, তাই জেলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের অধিকাংশ নেতা-কর্মী স্থায়ীভাবে ঢাকায় বসবাস করছেন। দলীয় গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি ছাড়া তাদের গোপালগঞ্জে খুব একটা দেখা যায় না। তারা ঢাকায় তদবির ও ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তবে জেলা আওয়ামী লীগ অফিস সরগরম করে রেখেছেন সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান। তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে  নিয়মিত সকাল-সন্ধ্যা দলীয় কার্যালয়ে বসেন এবং নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন্ সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি দলকে চাঙ্গা রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন এবং সব দলীয় কর্মসূচি দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে পালন করে যাচ্ছেন। অপরদিকে জেলা বিএনপির কোনো কার্যালয় বর্তমানে চোখে পড়ে না। নেতা-কর্মীদেরও দলীয় কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায় না। এক কথায় বলতে গেলে এক সময়ের দাপুটে বিএনপি এখন নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। পাঁচটি উপজেলা নিয়ে গঠিত জেলার তিনটি সংসদীয় আসন দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের দখলে। এলাকাটি আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত। কারণ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম স্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। এলাকার মানুষ বঙ্গবন্ধু-পাগল। তারা প্রার্থী দেখে না। তারা বঙ্গবন্ধুর নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তৃপ্তি পায়। আওয়ামী লীগ সরকার ছাড়া অন্য সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এলাকার তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নয়নমূলক কাজও হয়নি। তাই মানুষ সব সময় নৌকার পক্ষে ভোট দিয়ে প্রার্থীদের বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করে থাকে। বিতর্কিত ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ছাড়া বিএনপি কখনো গোপালগঞ্জের কোনো আসনে জিততে পারেনি। ওই সংসদ নির্বাচনেও শুধু কাশিয়ানি-মুকসুদপুর থেকে বিজয়ী হয়েছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর। এ কারণে বিএনপির রাজনীতি নিস্তেজ। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গোপালগঞ্জের নাম মুছে ফেলা হবে ঘোষণা দেওয়ায় এবং ‘গোপালী’ বলে টিটকারী দেওয়ার পর থেকে গোপালগঞ্জ জেলায় বিএনপি ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচি এলাকায় পালিত হতে দেখা যায়নি। বিএনপিতে কর্মীর চেয়ে নেতা বেশি। স্থানীয়ভাবে বিএনপিতে গ্রুপিং বেশি। এখানে সাবেক সভাপতি শরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর, সাইফুর রহমান নান্টু, এম এইচ খান মঞ্জু ও  সিরাজুল ইসলাম সিরাজের গ্রুপ নামমাত্র কাজ করছে। এখানে গ্রুপিংয়ে কারণে বিএনপির ভোট কমতে থাকে, বাড়ে না। কারণ এদের মধ্য থেকে যখন যে নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পান তখন অপর নেতারা তার কম ভোটপ্রাপ্তি নিশ্চিত করার কাজ শুরু করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে গোপালগঞ্জের তিনটি আসনে বিএনপির ভোট বাড়ছে না।

সর্বশেষ খবর