সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

পরকীয়া করে মাকে বিয়ে করায় ভাড়াটে দিয়ে খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে মায়ের সঙ্গে পরকীয়া করে বিয়ে করায় ক্ষুব্ধ ছেলে দুঃসম্পর্কের চাচাকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যা করিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। নিহত নবী হোসেনের লাশ উদ্ধারের এক সপ্তাহ পর শুক্রবার রাতে নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জ থেকে দুই যুবককে গ্রেফতারের পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ তথ্য জানিয়েছে। গ্রেফতার দুই যুবকের নাম আশিক মিয়া (২১) ও সুমন মিয়া (২৪)।

গত ১৭ অক্টোবর চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের হরিখাইন এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশ থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পটিয়া থানা পুলিশ। উদ্ধার করা লাশটির গলায় গামছা পেঁচানো ও পায়ের রগ কাটা ছিল বলে জানিয়েছিল পুলিশ।

পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান জানান, ১৭ অক্টোবর লাশটি উদ্ধারের পর পিবিআই আঙুলের ছাপ মিলিয়ে ওই যুবকের পরিচয় শনাক্ত করে। নবী হোসেন নামে ওই যুবকের বাড়ি ভৈরবের আগানগর ইউনিয়নের পুরানচর এলাকায়। লাশ উদ্ধারের পর নবী হোসেনের ভাই চট্টগ্রামে লাশ শনাক্ত করেন এবং পটিয়া থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। পিবিআই স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলার তদন্তভার নিয়ে নরসিংদী থেকে আশিক ও কিশোরগঞ্জ থেকে সুমনকে গ্রেফতার করে। পাশাপাশি হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়। এসপি নাজমুল বলেন, এ হত্যাকান্ডের হোতা সাব্বির নামে এক যুবক। তিনি সম্পর্কে নিহত নবী হোসেনের ভাতিজা। তার বাড়িও ভৈরবে। ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে সব্বির ভাড়াটে খুনি দিয়ে নবী হোসেনকে খুন করায়। হত্যার কারণ সম্পর্কে পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল বলেন, সাব্বিরের বাবা প্রবাসী। সে সুযোগে নবী হোসেন সাব্বিরের মায়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। পরে তারা পালিয়ে বিয়ে করে। সাব্বির বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে নবী হোসেনকে খুনের পরিকল্পনা করে। সে জন্য তুষার নামে একজনের সঙ্গে ৬০ হাজার টাকার চুক্তি করে সাব্বির। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ১৫ অক্টোবর মাইক্রোবাসে করে ভৈরব থেকে নবী হোসেনকে অপহরণের চেষ্টা করে গ্রেফতার ও পলাতক আসামিরা। কিন্তু তাতে তারা ব্যর্থ হয়। প্রথম দিন ব্যর্থ হওয়ায় তারা পর দিন মাইক্রোবাসের পরিবর্তে প্রাইভেটকার নিয়ে নবী হোসেনকে অপহরণ করে। পিবিআই কর্মকর্তা নাজমুল বলেন, অপহরণের পর নবী হোসেনকে চট্টগ্রামের দিকে নিয়ে আসার পথে কুমিল্লায় মহাসড়কে মুখে গামছা বেঁধে গলা টিপে হত্যা করে। পাশাপাশি মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য নবী হোসেনের পায়ের রগ কেটে দেয়। হত্যার পর নবী হোসেনের লাশটি প্রাইভেটকারে পায়ের নিচে রেখে তারা কক্সাবাজারের দিকে রওনা হয়। পথে পটিয়ায় লাশটি মহাসড়কের পাশে ফেলে দেয়। লাশ ফেলে তারা কক্সবাজার ভ্রমণ করে ভৈরবে ফিরে যায় বলেও জানান তিনি। এদিকে এ ঘটনায় ব্যবহৃত প্রাইভেটকারের পাশাপাশি আগের দিন অপহরণ চেষ্টার মাইক্রোবাসটিও পুলিশ আটক করে। সাব্বির, তুষারসহ পলাতক অন্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান এসপি নাজমুল।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর