রবিবার, ১৯ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

টিকটক চক্রের ফাঁদে পড়ে দুই সন্তানকে রেখে উধাও মা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বক্তাবলী এলাকায় দুই শিশু সন্তানকে ঘুম পাড়িয়ে উধাও হয়ে গেছেন রওশানা আক্তার সিনথিয়া নামে এক মা। ৭ জুন ভোরে যাওয়ার সময় নিয়ে গেছেন সৌদি আরব প্রবাসী স্বামীর পাঠানো টাকা ও অলংকার। এ ঘটনায় সৌদি প্রবাসী স্বামী আজিজুল ইসলাম বিদেশ থেকে এসে স্ত্রীকে ফিরে পেতে ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, টিকটকার চক্রের ফাঁদে পড়েছেন ওই নারী।

থানায় অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের মধ্যনগর এলাকার সৌদি প্রবাসী আজিজুলের সঙ্গে ১০ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল সিনথিয়ার। তার বাবার বাড়ি চরকাশিপুর এলাকায়। তাদের সংসারে ৮ বছরের সাজিত ও ৫ বছরের সাইফ নামে দুই ছেলে রয়েছে। কয়েক মাস আগেও তাদের সুখের সংসার ছিল। গত ৭ জুন দুপুরে স্বামী আজিজুল  জানতে পারেন ভোরে তার স্ত্রী সন্তানদের ঘুমে রেখে পালিয়ে গেছেন। এ খবর শুনে তিনি সৌদি থেকে দেশে ফিরে আসেন। গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় তার স্ত্রীকে খুঁজেছেন। তাকে না পেয়ে ফতুল্লা থানায় অভিযোগ করেছেন। ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও খোঁজ মেলেনি  স্ত্রী সিনথিয়ার। গতকাল বিকালে স্বামী আজিজুল গণমাধ্যম কর্মীদের কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তার বাচ্চা দুটো মার জন্য কাঁদছে। বার বার বলছে  মাকে এনে দিতে। আমার জীবনের সব উপার্জন নিয়ে তার স্ত্রী পালিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, বাচ্চাগুলোর কষ্ট সহ্য করতে পারছি না। বাচ্চাগুলোর দিকে তাকিয়ে আমিও চোখের পানি রাখতে পারি না।

আজিজুল আরও জানান, সিনথিয়া অনেক আগে থেকেই টিকটক আসক্ত ছিল। ইউটিউভে এক ছেলের তার অনেক টিকটক রয়েছে। ওই ছেলের সঙ্গে তার স্ত্রীকে প্রায়ই ভিডিও কলে কথা বলতে দেখেছে ছেলেরা। গত ৩ জুন তাদের বাড়িতে একটি মেয়ে এসেছিলেন। সে তিনদিন সেখানে অবস্থান করে চলে যায়। পরদিন ভোরেই সিনথিয়া ঘর ছাড়ে। শুনেছি ওই ছেলের বাড়ি হবিগঞ্জে। তিনি টিকটক আতিফ নামে পরিচিতি। তিনি বলেন, আমি এসব কিছুই জানতাম না। বাড়িতে ফিরে প্রতিবেশীদের কাছে সব জেনেছি। আমার মনে হয়, ওই ছেলে আমার বাড়িতে মেয়েটিকে পাঠিয়ে ছিল আমার স্ত্রীকে ফাঁদে ফেলতে। আমি চিন্তিত, সিনথিয়া যদি কোনো প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে যায়। তাহলে ওর জীবন শেষ হয়ে যাবে। এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার এ এস আই হাবিবুর রহমান জানান, আমরা ওই গৃহবধূর সন্ধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আমরা তার বাবার বাড়িতে গিয়ে তার চার ভাইসহ স্বজনদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তারা কোনো তথ্য দিতে পারেনি। ঘটনাটি পরকীয়া বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। পুলিশ ওই গৃহবধূকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে  ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রেজাউল হক দিপু জানান, ঘটনাটি ৭-৮ দিন আগের। ওই নারী কোনো চক্রের ফাঁদে পড়েছে নাকি অন্য কোনো ঘটনা রয়েছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি তার সন্ধানের চেষ্টা চলছে।

সর্বশেষ খবর