আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে কাঁচামালের দাম, কারখানায় চলছে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংকট। এসব সংকট মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন দেশের স্টিল, রড ও সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রির ব্যবসায়ীরা।
গতকাল এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত আয়রন, কার্বন স্টিল, স্টেইনলেস স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং ইন্ডাস্ট্রি সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির দ্বিতীয় সভায় ব্যবসায়ীরা এ সহায়তা চান। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন। বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ মো. জামাল উদ্দিন, এফবিসিসিআইর সহসভাপতি এম এ মোমেন, এফবিসিসিআইর পরিচালক এস এম জাহাঙ্গীর আলম (মানিক), সভায় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সাবেক প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী, কমিটির কো-চেয়ারম্যান মো. শহিদুল্লাহ, ড. সুমন চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল হক তালুকদার, ইঞ্জিনিয়ার বিমল চন্দ্র রায় ও অন্য সদস্যরা। ব্যবসায়ীরা জানান, বিশ্ববাজারে বৃদ্ধি পেয়েছে স্টিলসহ রড ও সিমেন্টের কাঁচামালের দাম। এদিকে কারখানায় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকট। এসব কারণে উৎপাদনও প্রায় এক-তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে। কম উৎপাদন নিয়ে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে, যা তৈরি করছে ঋণখেলাপি হওয়ার শঙ্কা। এ অবস্থায় সরকারের সহযোগিতা না পেলে দেশের স্টিল, রড ও সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, স্টিল খাত সরাসরি দেশের উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত। কভিডকালীন অনেক উন্নয়ন কাজ বন্ধ থাকায় সংকটের মুখে পড়ে এ শিল্প। তবুও ব্যবসায়ীরা বিভিন্নভাবে এ শিল্পকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। শিল্পায়নসহ দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এ খাতের ঘুরে দাঁড়ানো অত্যন্ত জরুরি। কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহসহ এ শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে ডলার তহবিল গঠনের দাবি জানান তিনি। পাশাপাশি ঋণপত্র (এলসি) খোলার ব্যাপারে সহযোগিতা করতে ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। এফবিসিসিআইর পরিচালক এস এম জাহাঙ্গীর আলম (মানিক) বলেন, ডলারের মূল্য বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বে স্টিলসহ নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়েছে। এ ছাড়া কারখানায় গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকটের কারণে ওভারহেড কস্ট বেড়েছে। উচ্চমূল্যে কাঁচামাল আমদানি এবং কম উৎপাদনে কর্মীদের বেতন-সবমিলিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে ভ্যাট ও ট্যাক্স মওকুফসহ কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক ৫ শতাংশ করার দাবি জানান তিনি।
