কুমিল্লার দেবিদ্বারে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ধর্ষণ-চেষ্টার অভিযোগে গতকাল উপজেলার মাশিকাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও দেবিদ্বার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোকতল হোসেনকে ঘেরাও করে মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
খবর পেয়ে দেবিদ্বার সার্কেল এএসপি আমিরুল্লাহ ও দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমলকৃষ্ণ ধরের নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। এ সময় জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এত পাঁচ পুলিশসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়। এ সময় অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধ হয়। আহতদের দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, গতকাল প্রথমে প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে ও পরে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে প্রধান শিক্ষক দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন। ওই ঘটনা ছাত্রীর সহপাঠীরা দেখে ফেলে। ঘটনাটি জানাজানির পর দুপুর থেকে রাত অবধি শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষকের কার্যালয় ঘেরাও করে রাখে। এ সময় প্রধান শিক্ষককে রক্ষায় তার পক্ষে বহিরাগত কিছু লোক এসে ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওউঠে। বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ও অভিভাবকরাও আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বিক্ষোভে অংশ নেন। খবর পেয়ে দেবিদ্বার সার্কেল এএসপি আমিরুল্লাহ ও দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমলকৃষ্ণ ধরের নেতৃত্বে পুলিশ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, সদস্য, শিক্ষক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। রাত অবধি চলা বিক্ষোভে বিক্ষুব্ধ জনতা প্রধান শিক্ষককে স্কুল মাঠে এনে বিচারের দাবি জানায়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা বিদ্যালয়ের দরজা-জানালা ও প্রধান ফটক ভাঙচুরের চেষ্টা করে। প্রধান শিক্ষকের মোটরসাইকেলটিসহ দুটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। রাত পৌনে ৯টায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান ও দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য নিয়ে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করেন।
দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কমলকৃষ্ণ ধর বলেন, ‘অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ এনে জনতা ওই শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখে কয়েক ঘণ্টা। খবর পেয়ে রাতে আমরা তাকে উদ্ধার করি।’
