এক যুগ আগে ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক এবং স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতা নারায়ণ চন্দ্র দত্ত নিতাইকে হত্যার দায়ে পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মো. রেজাউল করিম এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কামরুল, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, হাসান মিজি, সাঈদ ব্যাপারী ওরফে আবু সাঈদ। এ ছাড়া চার আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সাইদুল, প্যাদা মাসুম, আবুল কালাম ও ফয়সাল। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন রফিকুল ইসলাম। পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে চুরির দায়ে প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে এক মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আদালতের প্রসিকিউটর মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, রায় ঘোষণার সময় ১০ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের আবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ২২ আগস্ট রাতে মহাখালী ডক্টরস কোয়ার্টার্সের বাসার নিচতলায় ভিকটিমের বাবা-মা এবং দ্বিতীয় তলায় ডা. নারায়ণ চন্দ্র দত্ত (নিতাই) ঘুমাতে যায়। ওইদিন ভোরে নিতাইতের মা মঞ্জু দত্ত দ্বিতীয় তলায় আওয়াজ শুনতে পান। তিনি দ্বিতীয় তলায় উঠে দেখেন তার ছেলে বুকে ও মাথায় রক্তাক্ত আহত অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে আছে। নিতাইয়ের মায়ের চিৎকারে প্রতিবেশী ডা. আক্তার হোসেনসহ নিরাপত্তাকর্মীরা এসে চিকিৎসার জন্য দ্রুত বক্ষব্যাধি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ডা. নিতাইয়ের বাবা তড়িৎ কান্তি দত্ত বনানী থানায় মামলা করেন। ২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ১০ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক গাজী আতাউর রহমান। চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, চুরি করতে গিয়ে তারা ডা. নিতাই চন্দ্রকে হত্যা করেন। মিন্টু, রফিকুল, পিচ্চি কালাম, সাইদুল, প্যাদা মাসুদ, ফয়সাল এই মামলায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ওই বছরের ২২ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।