বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে গতকাল বিএনপি, জামায়াতসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির আহ্বানে হরতাল পালিত হয়েছে। হরতাল চলাকালে দিনভর বাগেরহাট থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহীসহ ৪৮টি দূরপাল্লার রুট ও আন্তজেলা রুটে সব ধরনের যানবাহন চলাচলসহ সড়ক পথে মোংলা বন্দরের মালামালা আনা-নেওয়ার কাজ বন্ধ থাকে। জেলার সব উপজেলা সদর ও পৌর শহরগুলোতেও সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। ক্ষুব্ধ জনতা সকালে জেলা, উপজেলার নির্বাচন অফিস ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিলে কোনো সরকারি কর্মকর্তা অফিসে ঢুকতে পারেননি। দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ স্কুল-কলেজ, ব্যাংক-বিমা অফিসের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। মোরেলগঞ্জে পানগুছি ও মোংলা নদীতে সড়ক বিভাগের ফেরি চলাচলও বন্ধ থাকে। মোংলা বন্দর ও বাগেরহাট জেলা সারা দেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সড়ক-মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছ ফেলে যানবাহন চলাচল বন্ধ করায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন দূরপাল্লার রুট ও আন্তজেলা রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা। হরতাল চলাকালে জেলার কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
একই দাবিতে আজ জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল এবং কাল বুধবার ও পরশু বৃহস্পতিবার আবারও জেলাজুড়ে একটানা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতারা। শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, দশানী মোড়, খান জাহান আলী (রহ.) মাজার মোড়, মুনিগঞ্জ সেতু ও দড়াটানা সেতু টোল প্লাজা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নির্বাচন অফিস ও জজ আদালতসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সকাল থেকে পিকেটিংয়ে তৎপর ছিলেন বিএনপির সাবেক এমপি শেখ মুজিবর রহমান, বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ কামরুল ইসলাম গোরা, খাদেম নিয়ামুন নাসির আলাপ, ব্যারিস্টার শেখ জাকির হোসেন, অহিদুল ইসলাম পল্টু, খান মনিরুল ইসলাম, ফকির তারিকুল ইসলাম, সৈয়দ নাসির আহমেদ মালেক, জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির সদস্য সচিব শেখ মুহাম্মদ ইউনুস, জেলা জামায়াত নেতা এস এম মঞ্জুরুল হক রাহাতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম বলেন, জনগণের দাবি উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন অন্যায়ভাবে বাগেরহাটের সংসদীয় আসন কমানোসহ আসনগুলোর সীমানা সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছে।
ইসি তাদের গেজেট পরিবর্তন না করা পর্যন্ত মোংলা বন্দর অচল করে দিয়ে আরও কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে। জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, ইসি বাগেরহাটের মানুষকে অবমূল্যায়ন করে জেলার একটি সংসদীয় আসন কমিয়েছে। তাদের এই চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে না।