গোটা বিশ্বের যাবতীয় আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে এখন ব্রাজিল। প্রায় ৬০ লক্ষ ক্রীড়াপ্রেমীর এখন নয়া ঠিকানা বিশ্বকাপের আয়োজক এই দেশ। ঝাঁ চকচকে স্টেডিয়াম, জোরালো আলোয় ভাসছে সাও পাওলো, রিও’র রাস্তাঘাট। ভিনদেশীতে ঠাসা রাজধানীর হোটেলের সব ঘর। সেক্স ট্যুরিজমের মত ব্যবসাও জমে উঠেছে। কিন্তু ব্রাজিলে বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে নাবালিকাদের বেআইনি যৌন ব্যবসার রমরমা ঠেকানো যাচ্ছে না। মাত্র এক প্যাকেট সিগারেটের দামে পর্যটকরা পাচ্ছেন নাবালিকাদের দেহ ভোগের সুযোগ।
এমনিতেই ব্রাজিল ফ্রি সেক্সের দেশ। যৌন ব্যবসা সে দেশে আইনিভাবে স্বীকৃত। কিন্তু ১৮ বছরেরও কম বয়সীরা যেভাবে বিশ্বকাপের সুযোগে সহজে টাকা রোজগারের রাস্তায় নেমে পড়েছেন তা নিয়ে চিন্তিত সে দেশের সরকার। ব্রাজিলের আইনজীবী অ্যান্টনিও লিমা সিওসার বক্তব্য, ‘এই নাবালিকারা চরম দারিদ্র দেখেছে। নিজের মা’কে অর্থের অভাবে যৌন ব্যবসায় নামতে দেখেছে। তাই যে মেয়ে মাত্র ১০ বছরের গণ্ডীও পেরোয়নি সেও বিশ্বকাপের সুযোগে সহজে অর্থ উপার্জন হিসেবে এই ব্যবসায় নেমে পড়েছে।’ ব্রাজিলের পঞ্চম জনবহুল শহর রেসিফিতে এই ব্যবসা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।
নাবালিকাদের ভোগ করতে বিদেশি পর্যটকদের গ্যাঁট থেকে খসাতে হচ্ছে মাত্র ২ ডলার, জানাচ্ছে সে দেশের এক সংবাদপত্র। কিছু নাবালিকা আবার টাকাও চাইছেন না। এক প্যাকেট সিগারেট বা একটু হেরোইনের বিনিময়ে শয্যায় যেতে প্রস্তুত ব্রাজিলীয় কিশোরীরা। এরকমই এক চাইল্ড সেক্স ওয়ার্কারের বক্তব্য, একটু নেশা করলে মাথার মধ্যে খিদের ভাবনা আসে না। তাই নেশা করি। আর নেশা করতে টাকা লাগে। টাকা দিবে কে? তাই এই ব্যবসায় নেমেছি। বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে ব্রাজিলে নাবালিকা যৌন কর্মীদের রমরমা বেড়ে গিয়েছে বহুগুণে। এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, সাউথ আফ্রিকা বা জার্মানিতে বিশ্বকাপের থেকে ব্রাজিলে বিশ্বকাপের সময় নাবালিকাদের এই পেশায় নামার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।
ব্রাজিল সরকার এই ব্যবসা থেকে নাবালিকাদের দূরে রাখতে বহু পয়সা খরচ করার দাবি করছে। কিন্তু সে দেশের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় কর্মরত এক সিস্টারের মতে, শিশুরা সঠিক পরিবেশে বাঁচার সুযোগ পেল কি না তা নিয়ে এ দেশের পুলিশ মোটেও চিন্তিত নয়। বরং পুলিশ এই ব্যবসা থেকে টাকা নেয়। আর পর্যটক ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে এই ব্যবসা লুকোতে চায়।