রাত জেগে খেলা দেখলে ঘুম আর হবে কী করে! আর ঘুম না হলে ঠিক সময়ে কাজে যাওয়াও সম্ভব নয়৷ তাই এ মুহূর্তে অফিস কামাইয়ের ধুম পড়েছে চীনে৷ পাওয়া যাচ্ছে নকল ‘সিক নোটস’৷
বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা চলছে ব্রাজিলে৷ চীনের সঙ্গে প্রায় ১২ ঘণ্টার সময়ের তফাৎ৷ অতএব খেলা দেখতে হলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবেই৷ কিন্তু রোজ রোজ কোন অজুহাতে অফিস ফাঁকি দেয়া যায়? কড়া নিয়ম এড়িয়ে কতদিনই বা কামাই করা সম্ভব? একমাত্র ডাক্তার বা হাসপাতাল থেকে সার্টিফিকেট পেলেই যা রক্ষা৷ অসুস্থ অবস্থায় তো আর কাজে যাওয়া যায় না!
চীনে এই চাহিদা মেটাতে চালু হয়েছে ‘সিক নোটস সার্ভিস'৷ দারুণ পরিষেবা৷ আপনাকে শুধু বলতে হবে, ঠিক কী কারণে অসুস্থ হতে চান, মানে নিজেকে অসুস্থ দেখাতে চান৷ জ্বর, হাড় ভাঙা, গর্ভপাত থেকে শুরু করে মারাত্মক সার্স ভাইরাস সংক্রমণ – রোগের বৈচিত্র্যের কোনো অভাব নেই৷ !
পরিষেবার ‘প্রডাক্ট ক্যাটালগ' থেকে পছন্দের অসুস্থতার কারণ বেছে নিন৷ মাশুল দিলেই হাসপাতালের স্ট্যাম্প ও ডাক্তারের স্বাক্ষরসহ সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন৷ গ্রাহকদের নাম-পরিচয় পুরোপুরি গোপন রাখার প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়ে থাকে৷
চীনে এটা অবশ্য নতুন কোনো পরিষেবা নয়৷ দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নকল নথিপত্র তৈরি করার ব্যবসা সে দেশে চলছে অনেক কাল ধরে৷ কিন্তু এত বড় আকারে এর চাহিদা বাড়ার কোনো ঘটনা আগে দেখা যায় নি৷ সংবাদ সংস্থা এএফপি সার্চ ইঞ্জিন ‘বাইডু'-তে ‘বেইজিং' এবং ‘সিক নোটস সার্ভিস' লিখে প্রায় ৪৯,৫০০ সাইটের খোঁজ পেয়েছে৷ কয়েকটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম অবশ্য এমন খোঁজ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে৷
‘সিক নোটস' পরিষেবার দামও বেশি নয়৷ নোট প্রতি ৩ ডলার ২০ সেন্ট দিলেই হলো৷ এক বিক্রেতা জানিয়েছেন, দিনে ৩০টির মতো ‘সিক নোটস' বিক্রি হচ্ছে৷ তবে ধরা পড়লে চাকরি হারাবার ভয়ও রয়েছে৷ এমনকি প্রতারণার জন্য শাস্তিও পেতে হতে পারে৷ কিছু কোম্পানি অবশ্য ফুটবল জ্বরের আগাম আভাস পেয়ে আগেভাগেই কাজের সময় বদলে ফেলেছে৷ তাতে সাপও মরছে না, লাঠিও ভাঙছে না৷